জেলযাত্রার পর থেকেই গুরুতর অসুস্থ তাঁরা। ভর্তি করতে হয়েছে হাসপাতালে। সেই কারণ দেখিয়েই হাইকোর্টে জামিন মঞ্জুরের আবেদন করেছিলেন নারদকাণ্ডে গ্রেফতার ৪ নেতা-মন্ত্রীর মধ্যে ৩ জন। শুক্রবার রাতে তাঁদের মধ্যে ২ জনকে দেখা গেল হাসপাতালের করিডরে বহাল তবিয়তে হেঁটে বেড়াতে। কোথাও নেই অসুস্থতার কোনও লক্ষণ। সঙ্গে দেখা গেল একজনের বান্ধবীকেও। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের যদিও দাবি, একটা জিনিস দিতে সুব্রতবাবুর ঘরে গিয়েছিলেন তিনি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে বাকি ২ জনে?
শুক্রবার রাতে টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, SSKM হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ঘর থেকে বেরোচ্ছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মদন মিত্র। ওয়ার্ডের করিডরে পরিচিত কায়দায় হেঁটে নিজেদের ঘরের দিকে যাচ্ছেন তাঁরা। এর পরই প্রশ্ন ওঠে, বিচারাধীন ২ বন্দি অন্য এক বন্দির ঘরে গিয়েছিলেন কেন? কী আলোচনা হল সেই বৈঠকে?
কেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়েছিলেন তাঁরা। বৈশাখীদেবী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘আমার কাছে শোভনবাবু ও সুব্রতবাবুর ওকালতনামা ছিল। সেই ওকালতনামা দিতে গিয়েছিলাম। আর শোভনবাবুকে চিকিৎসক ২ বেলা হাঁটতে বলেছেন। উনি রোজই হাঁটেন।’ বৈশাখীদেবীর যুক্তি, ‘বৈঠক করতে তো ৫ মিনিট সময় লাগে। ওখানে তো একজন ঢুকেছে আরেক জন বেরিয়েছে দেখা যাচ্ছে। তাহলে বৈঠক হবে কী করে?’ তবে মদন মিত্রের ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি বৈশাখী।
তবে প্রশ্ন উঠছে, সুব্রতবাবুর এখন কোনও সাধারণ রোগী নন। তিনি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকা বন্দি। মদনবাবু ও শোভনবাবুও রয়েছেন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে। একটা ওকালতনামা দিতে কেন তিন জনকে হাজির হতে হলো সুব্রতবাবুর ঘরে? শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট ৪ অভিযুক্তকে গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ববি হাকিম ছাড়া বাড়ি ফেরেননি কেউ। সঙ্গে প্রত্যেক অভিযুক্তের সঙ্গে কে কে সাক্ষাৎ করছে তার নথিভুক্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শুক্রবার রাতে সুব্রতবাবুর সঙ্গে যে অন্য ২ অভিযুক্তের সাক্ষাৎ কি কোথাও নথিভুক্ত হয়েছে? আদালতের নির্দেশ অনুসারে অন্যথা হলে প্রত্যাহার করা হতে পারে গৃহবন্দি থাকার সুবিধা।