অধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ ফিরহাদ হাকিমকে আইনি নোটিস পাঠালেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, একজন মহিলা সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন ফিরহাদ, তা অপমানজনক। সুতরাং অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে। নাহলে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরহাদ হাকিমের পাশাপাশি আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে আমিরউদ্দিন ববিকেও।
মিল্লি আল আমিনের ছাত্রীদের একটি অংশ কলেজ ক্যাম্পাসে নির্দিষ্ট কিছু দাবিতে অবস্থানে বসেছিলেন। ৪ ডিসেম্বর সেখানে গিয়ে পুরমন্ত্রী আন্দোলনে সহমর্মিতা জানানোর পাশাপাশি বলেন, ‘কলেজ কে টিচার ইনচার্জ কো উখাড় কে ফেক দো।’ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলার মানুষ দেখেছে কলেজ শিক্ষার সঙ্গে দূর–দূরান্তের কোনও সম্পর্ক নেই, এমন একজন পুর প্রশাসক কলেজ সংক্রান্ত বিষয়ে একজন মহিলা টিচার ইনচার্জকে এমন অভব্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন, তাতে আমার মানহানিই শুধু ঘটেনি, আমায় চাকরি ছাড়তে হয়েছে। তাই জন্যেই ওই দুই ব্যক্তিকে নোটিস দিয়েছি আমি।’
এই ঘটনার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ফিরহাদ হাকিমের নামে নালিশ করেন। রাজভবন থেকে বেরিয়ে তিনি এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় একযোগে পুরমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রবল নিন্দা করেন। ওই নোটিসে সময়সীমাও বেঁধে দিয়ে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'সম্মান নিয়ে বাঁচাটা মৌলিক অধিকার। সেই সম্মানটাই নষ্ট হয়েছে। উনি যে কথা বলেছেন তা ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটা শুধু কলেজের চৌহদ্দিতে আটকে নেই। আমার মর্যাদাটা নষ্ট করেছে। ক্ষমা চাওয়ার সময়সীমা পার হলে আদালতে যাব।'
উল্লেখ্য, শোভন–বৈশাখী রাজভবন থেকে ফেরার পরেরদিনই মিল্লি আল আমিন থেকে রামমোহন কলেজে বদলি করা হয় বৈশাখীকে। সরকারি সেই চিঠি তিনি মেনে নিতে পারেননি। রাজ্যের মন্ত্রীর মন্তব্যে তিনি অপমানিত বোধ করেন। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে রাজভবন, মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও উচ্চশিক্ষা দফতরে ইস্তফার চিঠি পাঠান বৈশাখী। বৈশাখীদেবী হঠাৎই চাকরি থেকে ইস্তফা দেন শুক্রবার। ক্ষোভপ্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, ‘নেতা–মন্ত্রীরা যদি এইভাবে আমার ছবিটা ম্লান করে দিতে থাকে শুধু মিলি আল আমিন নয়, কোনও কলেজেই সম্মানের সঙ্গে করতে পারব না।’