কয়েক মাস পরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তাই নিজেদেরকে প্রস্তুত করে নিতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। এই কারণে গত লোকসভা নির্বাচনে শহরের কোথায় কী গোলমাল হয়েছিল, তা কলকাতা পুলিশের কাছে জানতে চাইল নির্বাচন কমিশন।
সূত্রের খবর, এমনকী গোলমালের পরে পুলিশ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল, কোনও মামলা রুজু করেছিল কি না বা সেই মামলার বর্তমান অবস্থা কী সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, কোনও বুথে ভোটের সময়ে কোনওরকম অশান্তি হয়েছিল কি না, সেটাও জানাতে বলা হয়েছে থানাগুলিকে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এভাবেই পুলিশ–প্রশাসনকে বেঁধে ফেলতে চাইছে কমিশন।
পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে লালবাজারের কাছে এই সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে মেল পাঠানো হয়েছে। সেই ইমেল থানাগুলিকে পাঠিয়েছে লালবাজার। এখন সেই মেলের জবাব মিলতেই তা জানিয়ে দেওয়া হবে নির্বাচন কমিশনকে। ইতিমধ্যে শহরের কয়েকটি থানা ওই সংক্রান্ত তথ্য লালবাজারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে, যা পাঠানো হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, নির্বাচনের প্রস্তুতির অন্যতম অঙ্গ হিসেবে আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র কোনগুলি, তার সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই বিষয়ে একটি ম্যাপিং তৈরি করা হচ্ছে। এই ম্যাপিং তৈরি করতে শেষ কয়েকটি নির্বাচনে কোন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বেশি বা কম ভোট পড়েছে, সেই হিসেবও পুলিশ ও প্রশাসনের থেকে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। যা পরে কাজে আসবে।
এই তথ্য চাওয়ার মধ্যে দিয়েই আসন্ন বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিল নির্বাচন কমিশন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কারণ নির্ধারিত সময়ে বিধানসভার ভোট হতে আর বাকি রয়েছে প্রায় চার মাস। তাই এখন থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ শুরু করে দিয়েছে।
এক পুলিশ কর্তার মতে, ‘সময়ে নির্বাচন হলে এখন হাতে আর চার মাস রয়েছে। তাই বসে থাকতে রাজি নয় কমিশন। এই তথ্য চাওয়ার মধ্যে দিয়ে মনে করা হচ্ছে যে, তারা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এই প্রথম থানার কাছ থেকে এই সংক্রান্ত নথি চাইল নির্বাচন কমিশন।
লালবাজার সূত্রে খবর, নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই কয়েকটি থানার ওসি এবং অতিরিক্ত ওসিদের বদলি করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও জেলা বা ডিভিশনে তিন বছরের বেশি কাজ করা পুলিশ কর্মীদের ভোটের সময়ে সেখানে রাখা যায় না। এই কথা মাথায় রেখেই গত সপ্তাহে ৭৯ জন ইনস্পেক্টরকে বদলি করা হয়েছে।