পয়লা বৈশাখে বাংলার প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করতে নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুমতি চেয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই অনুমতি মিলেছে। তাই রাত পোহালেই বাংলা নববর্ষ এবং বাংলা দিবস পালিত হবে। এবারের বাংলা দিবসের অভিনবত্ব হচ্ছে সকালে শহরবাসীর ঘুম ভাঙবে রবীন্দ্র সংগীত দিয়ে। কানে আসবে কালজয়ী সব গান। এটা এবার প্রথম হচ্ছে। সামনে লোকসভা নির্বাচন। চারিদিকে প্রচার, বক্তব্য, সভা–সমাবেশ দেখে মানুষ এখন ক্লান্ত। তাই ক্লান্ত শরীরে কোমল পরশ দিতেই ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই ভেসে আসতে পারে বাংলার মাটি বাংলার জল। আবার ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি থেকে শুরু করে নয় নয় এ মধুর খেলা।
কল্লোলিনী কলকাতার বড় রাস্তা থেকে শুরু করে আনাচে কানাচে শোনা যাবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি করা গান। আর তা শুনেই আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠে চায়ে চুমুক দিয়ে নতুন সকাল উপভোগ করবেন সকলে। আর এভাবেই পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলা দিবস পালিত হবে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডেই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে সকালে রবি ঠাকুরের গান শুনে ঘুম ভাঙে মহানগরীর বাসিন্দাদের। ১৪৪টি ওয়ার্ডের অন্তর্গত ১৬টি বরো। প্রত্যেকটি বরোতে মাইক লাগিয়ে চালানো হবে রবীন্দ্র সংগীত। পয়লা বৈশাখকে ‘বাংলা দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটি এখন বঙ্গের সঙ্গীত হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ‘রামনাম সংস্কার এবং সংস্কৃতির গর্ব’, রামমন্দিরে পুজো দিয়ে বার্তা দিলেন রাজ্যপাল
তবে এই বাংলা দিবস অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ এখন নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি চলছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই কারণে কোনওরকম উপহার দেওয়া বা নেওয়া হবে না। বাংলা দিবস বা রাজ্য দিবস পালিত হবে বাংলার সংস্কৃতির উপর নির্ভর করেই। তাই পুরুলিয়া থেকে কেউ নিয়ে আসছেন আদিবাসী। কেউ আনছেন হাজার ঢাকি। এমনকী নানারকম বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। পশ্চিমবঙ্গ দিবসকে সম্মান জানিয়ে অনেক জায়গায় বেরবে শোভাযাত্রা। তাই রাত পোহালে বাংলা নববর্ষে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনে আলাদা উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে।
এছাড়া রবীন্দ্রসদনের সামনে ক্যাথিড্রাল রোডে এই অনুষ্ঠান হবে। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকর থাকায় সরকারি অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতা–নেত্রীরা থাকতে পারবেন না। এই বিষয়ে মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটি স্বতন্ত্র দিন উদযাপনের কথা ভেবেছেন। তাঁর কথা মতোই শহরে শোভাযাত্রা হবে।’ মেয়র পারিষদ মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস উপলক্ষ্যে বাঘাযতীন বিদ্যাসাগরের মাঠে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’ গত অগস্ট মাসে প্রাক্তন সাংসদ সুগত বসুর নেতৃত্বে কমিটি পয়লা বৈশাখ দিনটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন করার প্রস্তাব দেন। আর সেটাতেই সিলমোহর পড়ে।