একুশের নির্বাচনে পরাজয়ের পর জেলায় জেলায় সংগঠনে ভাঙন ধরতে শুরু করে। তখন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, বিজেপির বিধায়করা তৃণমূল কংগ্রেসে যাবেন না। সেই দাবি যে ভুল ছিল তা স্বীকার করে নিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তারপরই দেখা যায়, গত জুন মাসে মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরেছেন। আর এই সপ্তাহে সোমবার এবং মঙ্গলবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরেছেন যথাক্রমে বিষ্ণুপুর এবং বাগদার বিধায়ক তন্ময় ঘোষ এবং বিশ্বজিৎ দাস। তাতে বিরাট স্নায়ুর চাপ বেড়েছে গেরুয়া শিবিরের। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে উত্তরবঙ্গের দলীয় বিধায়কদের হুইপ জারি করে বৈঠকে ডেকেছিল বিজেপি। সেখানেও গরহাজির ছিলেন পাঁচ বিধায়ক এবং ৬ সাংসদ। তাতে আরও স্নায়ুর চাপ বেড়ে গিয়েছে।
এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে দিলীপবাবু বলেন, ‘মুকুল দার মতো নেতার উপরে আমরা ভরসা রেখেছিলাম। তাঁকে আমরা দলের সর্বভারতীয় পদ, প্রথমবার নির্বাচনে জেতার স্বাদ দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি চলে গেলেন। মুকুলদা’র মতো নেতা এমন করলে রাজনীতির পতন হয়েছে বলতে হয়। তাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, আমাদের দল ছেড়ে কেউ যাবেন না। হয়তো আমি কোথাও ভুল প্রমাণিত হয়েছি!’ এই মন্তব্যে বিজেপি রাজ্য সভাপতির হতাশা প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
আবার দিলীপবাবুর এই স্বীকারোক্তি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশের ভুলের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস–সহ অন্য দল থেকে নেতা–কর্মী লাগাতার বিজেপিতে নেওয়া এবং তাঁদের অনেককে প্রার্থী করা হয়। বিজেপির শীর্ষ নেতা তথাগত রায়–সহ অনেকের এই নীতিতে সায় ছিল না। তবে রাজ্য পার্টির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী–সহ চারজন ওই কৌশলের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু এখন দিলীপবাবু ভুল স্বীকার করে কৈলাসদের কৌশলকে ‘ভুল’ বলে কাঠগড়ায় তুলে দিলেন।
এই বিষয়ে ভোকাল টনিক দিতে শুভেন্দু বলেন, ‘গত ১০ বছরে ৫০ জনের বেশি বিধায়ক দলবদল করেছেন। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী দল তাঁদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ–বিরোধী আইন প্রয়োগে সচেষ্ট হয়নি। আমরা কিন্তু সংবিধান এবং গণতন্ত্র রক্ষার্থে শেষ পর্যন্ত লড়ব। পদত্যাগ না করে দলবদল রুখতে, সে ব্যাপারে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে যা করার, করব।’