ব্রিগেডের ‘জনগর্জন’ সভা উপলক্ষ্যে কর্মী–সমর্থকদের জন্য খাবার ব্যবস্থা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কলকাতার নানা জায়গায় রেখে খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে তারপরও দেখা গেল মঞ্চে যখন পৌঁছেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তখন পুরুলিয়া থেকে আসা কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী–সমর্থক চায়ের তেষ্টায় এদিক–ওদিক খোঁজ করছেন। কিন্তু মাথার উপর সূর্যের তেজ দেখা গেলেও চায়ের দেখা মেলেনি। এমন আবহে কয়েকজন ওই কর্মী–সমর্থকদের আঙুল তুলে দেখালেন এগিয়ে গেলেই মিলবে গাড়ি। সেখানে মিলবে চা–বিস্কুট।
এই অঙ্গুলি নির্দেশ দেখে সেদিকে পা বাড়ান পুরুলিয়ার ওই কর্মী–সমর্থকরা। তবে সেই জায়গায় যাওয়ার আগে তাঁরা নিজেদের মধ্যে বললেন, ‘দাদার কথা শুনতে হবে। তার আগে চল একটু ভাল চা খেয়ে নিই।’ তারপর দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে গিয়ে চায়ের তেষ্টা মেটালেন তাঁরা। চা–বিস্কুট খেয়ে আবার ফিরে এলেন মঞ্চের কাছে। দাদা বলতে এখানে তাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা শোনার জন্য বলেছেন। যে কথা শুনে তাঁরা আবার ফিরবেন নিজেদের জেলায়। সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁকে প্রার্থী করবেন সেই নামটি জেনে এলাকায় গিয়ে আলোচনা করবেন। প্রচার করবেন তাঁর হয়ে। তাই চায়ে চুমুক দিয়ে আবার নির্দিষ্ট জায়গায় ফিরে আসেন।
আরও পড়ুন: ‘দুর্নীতির পান্ডা জগন্নাথের হাত থেকে নদিয়াবাসীকে উদ্ধার করতে চাই’, আক্রমণ মুকুটমণির
এদিকে চা পান করতে গিয়ে এই কর্মী–সমর্থকরা দেখতে পেলেন, গাড়িতে ‘মোবাইল কিচেন’ লেখা। আবার সেখানে বড় করে রয়েছে কলকাতা পুলিশের লোগো। তা হলে কী শুধু কলকাতা পুলিশের কর্মীদের জন্য এমন ব্যবস্থা? প্রথমে সেটা ভেবেই চিন্তায় পড়ে যান কর্মী–সমর্থকরা। যদিও আরও কাছে যেতেই ভুল ভাঙল তাঁদের। নির্দিষ্ট দাম দিয়ে তাঁরা হাতে পেলেন চা, বিস্কুট, কেক, লাড্ডু, জলের বোতল–সহ নানা খাবার। এই গাড়ি থেকেই এমন সব খাবার মিলবে তা প্রথমে ভাবতেই পারেননি তাঁরা। ওই গাড়ির ভিতরে কাজ করছেন দুই যুবক। তাঁরাই জানান, সকালে রুটি–তরকারি করা হয়েছিল। গাড়ির ভিতরেই আছে রান্নার ব্যবস্থা। সঙ্গে চা–বিস্কুট এবং বেশ কিছু শুকনো খাবার রাখা হয়েছে সকলের জন্যই।
অন্যদিকে এটা কারা চালায়? তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা প্রশ্ন করেন। জবাবে গাড়ি থেকে মুখ বাড়িয়ে এক কর্মী বললেন, ‘আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে, লালবাজারে আমরা ক্যান্টিন চালাই। সেটাই এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ পুলিশ এখানে মোতায়েন রয়েছে। তাঁদের কথা ভেবেই এই গাড়ি আনা হয়েছে। তবে কিছু মানুষও এখানে এসে খেয়ে গিয়েছেন। তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের কিনা জানা নেই। কদিন আগে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ধরনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনও ওই গাড়ি বেরিয়ে ছিল। এবার ব্রিগেডে এসেছে।’ ব্রিগেডের পূর্ব দিকে ছিল কলকাতা পুলিশের ওই মোবাইল কিচেন ভ্যান। ১০ টাকা দিলে এক কাপ চা মিলছিল। তাতে অনেকেরই উপকার হয়।