আদালতে জাল নথি পেশের দায়ে মানিক ভট্টাচার্যকে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার এই নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গে মঙ্গলবার মানিকবাবুকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সংসদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে বেশ কিছু নথি জমা দিতে বলেছিল আদালত। সোমবার সেই নথি আদালতে জমা পড়ে। এর পর মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, যে নথি জমা পড়েছে তা ভুয়ো। মানিকবাবুর কাছে ২০১৭ সালের নথি চাওয়া হয়েছিল। উনি ২০২২ সালে বানানো নথি আদালতে পেশ করেছেন। এর পরই অবিলম্বে মানিকবাবুকে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দেন তিনি। নতুন সভাপতি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচী সভাপতির দায়িত্ব সামলাবেন বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে পর্ষদের পেশ করা নথি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য দিল্লিতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
একই সঙ্গে এদিন আদালত যে বৈঠকে ২৭৩ জন প্রার্থীকে অতিরিক্ত ১ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বিচারপতি বলেন, যে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সেখানে হাজির ছিলেন মানিকবাবুসহ ৪ জন। কিন্তু বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের নথিতে মানিকবাবু ছাড়া আর কেউ সই করেননি। বৈঠক কি আদৌ হয়েছিল? ওই বৈঠকে হাজির বাকি ৩ জনকে মামলার পক্ষ করে হলফনামা তলব করেছেন বিচারপতি।
যে প্রার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে নম্বর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেছিল সংসদ সেই আবেদনপত্র আদালতে পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। সোমবার একটিও আবেদনপত্র আদালতে জমা দিতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। বদলে আবেদনকারীদের রোল নম্বর জমা দেয় তারা। যা দেখে প্রলব ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি।
মানিক ভট্টাচার্যকে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কারের পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে আগামী কাল বেলা ২টোয় আদালতে হাজির থাকতে বলেছেন। বিচারপতি জানিয়েছেন, মানিকবাবুকে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করতে চান তিনি। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যে ২৬৯ জনকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।