বিজেপিতে যোগ দিয়েই নারদকাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারীকে ক্লিনচিট দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি দাবি করলেন, নারদকাণ্ড পুরোপুরি চক্রান্ত। আর সেই চক্রান্তটা করেছেন ‘তালপাতার সেপাই’ তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি অভিষেকের নাম না করলেও তাঁর দিকেই যে ইঙ্গিত ছিল, সেটা নিয়ে কোনও ধন্দ নেই সংশ্লিষ্ট মহলের। অভিজিৎ দাবি করেন, শুধু শুভেন্দু নন, তৃণমূলের যে যে নেতাদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছিল। নিজের স্বার্থে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিলেন। তিনি বলেন, কেউ-কেউ সেই চক্রান্তের শিকার হয়ে এখনও ওই তালপাতার সেপাইকে সেনাপতি বলে ডাকছেন।'
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাংবাদিক বৈঠকের আপডেট
— বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: নারদকাণ্ড চক্রান্ত। এটা চক্রান্ত। ওই ভদ্রলোককে ব্যবহার করে এটা কোনও দুর্নীতির যোগ নেই। আগে এটার চক্রান্তের দিকটা দেখতে হবে। তৃণমূল নেতারাও সেই চক্রান্তের শিকার। উল্লেখ্য, নারদকাণ্ডে তৎকালীন তৃণমূল নেতা তথা বর্তমান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল।
— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কি ভাবছেন? বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আর যে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আর কী!
— 'আপনি কি মনে করেন যে তৃণমূল মানে দুর্নীতি? আর দুর্নীতি হল তৃণমূল?', সাংবাদিক বৈঠকে এমনই এক প্রশ্ন উড়ে আসে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'হ্যাঁ, আমি মনে করি।'
— অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়: এই তৃণমূল দল আর পশ্চিমবঙ্গে বেশিদিন টিকে থাকবে না।
— বুধবার কি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় যোগ দেবেন? অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আপাতত সেরকম কোনও সম্ভাবনা নেই। সম্ভবত আগামিকাল থাকবেন না তিনি।
— বিজেপিতে যে যোগ দিচ্ছেন, সেই দল কি দুর্নীতিমুক্ত? সেটার জবাবে অভিজিৎ বলেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত দল কি দুর্নীতিমুক্ত দল নয়, সেটা আমার মনে করার কথা নয়। আমি যদি কোনও দায়িত্ব পাই সেই দলে, তাহলে আমি অবশ্যই যে কাজটা করব, সেটা হল দুর্নীতিমুক্ত করার কাজ।'
— বিজেপিতে কেন যোগ দিলেন? অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'বিজেপি একমাত্র সর্বভারতীয় দল। যে দল তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে।' সেইসঙ্গে তিনি জানান, এই রাজ্যে একমাত্র বিজেপিই হল সর্বভারতীয় দল।
— অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়: আমি ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিচ্ছি। শীঘ্রই যোগদান করব। সম্ভবত ৭ মার্চ যোগ দেব। কোন আসন থেকে আমি লড়াই করব, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। এই বিষয়ে কিছু জানি না। আমি টিকিট পাই বা না পাই, আমি বিজেপির নীতি রূপায়ণের কাজ করব।
— প্রাথমিকভাবে সূর্য সেনের মূর্তির পাদদেশে নিজের পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে মুখ খুলবেন বলে জানিয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে আজ সকালে জানিয়ে দেন যে নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করবেন। তিনি বলেন, ‘এখানে (যে সাংবাদিক বৈঠক করব বলেছিলাম, সেটা) করতে পারছি না। ১৪৪ ধারা থাকে তো।’
— কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের শেষদিন ছিল সোমবার। তাঁর হাতে যে মামলাগুলি ছিল, সেগুলি ছেড়ে দেন তিনি। তারইমধ্যে আবেগে ভেসে যান মামলাকারীদের একাংশ। অনেকের চোখে জলও দেখা যায়। যদিও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান যে তাঁর যাওয়ার সময় এসে গিয়েছে।
— বিজেপিতে কি যোগ দিচ্ছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়? বিজেপির টিকিটে কি তিনি লোকসভা লড়াই করতে চলেছেন? সেই জল্পনার মধ্যেই আজ সাংবাদিক বৈঠক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের। যিনি আজই নিজের ইস্তফাপত্র ডাকযোগে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী র্মুর্মু এবং প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। দেখা করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের সঙ্গে। তারপর সল্টলেকে নিজের বাড়িতে চলে আসেন। সেখানেই তাঁর সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়।