জাতীয় শিক্ষানীতি কতটা মানছে বাংলা? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ নয়া পরীক্ষা বিধি চালু করতে উদ্যোগ নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এখনই দেড় শতাধিক কলেজের প্রথম সেমেস্টারের পড়ুয়াদের জন্য পরীক্ষা বিধির খসড়া তৈরিও করেছে। সূত্রের খবর, জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে নিয়েই এই প্রথম কলেজের হাতে পরীক্ষার ভার ছাড়তে চলেছে কর্তৃপক্ষ। তার জেরে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করবে কলেজই। হোম সেন্টারেই পরীক্ষা দিতে পারবেন পড়ুয়ারা। এমনকী নিজের কলেজের শিক্ষকরাই খাতা দেখে মূল্যায়ণ করবেন।
এদিকে জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে নিয়েই চার বছরের স্নাতক স্তরের (অনার্স) এবং তিন বছরের জেনারেল কোর্সের বদলে চালু হয়েছে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি কোর্স। তার জেরে ইন্টার ডিসিপ্লিনারি কোর্স পড়ানো হচ্ছে। এবার খসড়া পরীক্ষা বিধি ইতিমধ্যেই বিলি করা হয়েছে। তাতেই পরীক্ষা পদ্ধতি এবং পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে কলেজের হাতে ছাড়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর কলা, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান শাখায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেমেস্টারে ইন্টার ডিসিপ্লিনারি কোর্সের জন্য ৭৫ নম্বর করে মোট ২২৫ নম্বর বা ৯ ক্রেডিটের উপরে পরীক্ষা নেবে কলেজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইন্টার ডিসিপ্লিনারি কোর্সের ক্ষেত্রে ৫০ নম্বরের থিওরি এবং বাকি ২৫ নম্বরের টিউটোরিয়াল হবে। টিউটোরিয়াল ভাইভা অথবা প্রজেক্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। আর অনার্স ও পাশের পরিবর্তে মেজর ও মাইনর বিষয় এবং পেপারের পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় আগের মতোই নেবে।
অন্যদিকে জাতীয় শিক্ষানীতির ফলে প্রচুর বিষয় ও পেপার বেড়েছে। তাই ৬ মাসে অন্তত ১৬ সপ্তাহ ক্লাস সুনিশ্চিত করতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হাতে ইন্টার ডিসিপ্লিনারি কোর্সের পরীক্ষার ভার দিতে চায়। তবে একজামিনেশনস রুলস সিন্ডিকেটে পাশ করা বাধ্যতামূলক। তাই উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছে সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকার অনুমতি চেয়ে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। তাই পরীক্ষা কবে হবে? সেটা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার কথা।
আরও পড়ুন: আবার রাজ্যপালকে কালো পতাকা দেখতে হল, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখাল তৃণমূল কংগ্রেস
আর কী জানা যাচ্ছে? একাধিক কলেজ অধ্যক্ষর বক্তব্য, ২০১৮ সালে সিবিসিএস চালু হতেই কলেজে পড়াশোনার সময় অনেকটাই কমেছে। ইউজিসি সেমেস্টারপিছু ১৫–১৬ সপ্তাহ ক্লাসের কথা বলেছে। কিন্তু এখন সেটা কমে ১০–১২ সপ্তাহে ঠেকেছে। অথচ থিওরি এবং প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা শেষ করতেই একমাস কেটে যায়। তাই এইসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইন্টার ডিসিপ্লিনারি কোর্সের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নিতে চাইছেন না।