দিনভর নাটকের অবসান। শনিবার রাতে রেলওয়ে জানিয়েছে অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের থেকে ছাড়পত্র এসেছে আটটি ট্রেন চালানোর যেটায় করে পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরবেন। যদিও অমিত শাহ বলার পরেই রাজ্যর টনক নড়েছে, সেটা মানতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গ। তাই রেলওয়ে টুইট করার পর ফের পালটা টুইট করেন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় তার সরকারি হ্যান্ডেল থেকে।
ভারতীয় রেলের এক পদস্থ কর্তা জানান তিনটি ট্রেন কর্নাটক থেকে, দুটি করে পঞ্জাব ও তামিনলাড়ু থেকে ও একটি তেলঙ্গানা থেকে বাংলায় আসবে আগামী কিছু দিনে। তবে রাজ্যের দাবিকে খণ্ডন করে রেলকর্তা বলে এদিন কোনও শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন রওয়ানা দেয়নি বাংলার উদ্দেশে।
এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি ট্রেন চালালেও বাংলা শুধু দুটি ট্রেনের অনুমতি দিয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সংক্রান্ত চিঠির পর আরও আটটি ট্রেন চালানোর রাজ্য অনুুমতি দিয়েছে বলে রেলের দাবি।
প্রয়োজন সত্ত্বেও মহারাষ্ট্র থেকে কোনও ট্রেন আসার অনুমতি রাজ্য দেয়নি বলেও জানায় ভারতীয় রেল।
যদিও অমিত শাহ বলার পর রাজ্য অনুরোধ পাঠিয়েছে, সেই দাবি ফের রাতে খণ্ডন করেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন আট তারিখই অনুমতি মিলেছিল, তাই রেলের দাবি অসত্য।
প্রসঙ্গত করোনায় আক্রান্ত ও মৃত, উভয় তালিকাতেই দেশের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। শনিবার বিকেলে নবান্নে পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ৮টি নয়, ভিনরাজ্য থেকে শ্রমিকদের নিয়ে ফিরছে ১০টি ট্রেন। সঙ্গে আশেপাশের রাজ্যগুলি থেকে ১,০০০ বাসে করে ফিরছেন শ্রমিকরা। যদিও রেলমন্ত্রক তখন বলে , পশ্চিমবঙ্গের কাছ থেকে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালানোর জন্য কোনও আবেদন পায়নি তারা।
এদিন আলাপনবাবু বলেন, কেরল, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, পঞ্জাব থেকে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের ফেরানো হবে। রবিবার একটি ট্রেন তেলেঙ্গানা থেকে মালদা পৌঁছবে। এছাড়া উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের তীর্থস্থানগুলি থেকে তীর্থযাত্রীদের ফেরানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সঙ্গে স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, প্রায় ২০,০০০ মানুষ গাড়ি ও অন্যান্য পদ্ধতিতে পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছেন।
প্রবাসী শ্রমিকদের ফেরানো হবে বলে শুক্রবার তৃণমূলের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালানো হয়। জানানো হয় শনিবার বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদ থেকে প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে ছাড়বে ৪টি ট্রেন। যদিও শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও ট্রেন ছাড়েনি বলে টুইটে জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এবার রেলও জানিয়ে দিল যে শনিবার কোনও ট্রেন ছাড়েনি।
তৃণমূল সরকার রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরতে দিচ্ছে না ও এটা তাদের সঙ্গে অন্যায্য করা হচ্ছে বলে শনিবার সকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখেন অমিত শাহ। এই অভিযোগ খণ্ডন করে তৃণমূল বলে ধাপে ধাপে তারা পরিযায়ীদের ফেরাচ্ছেন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠির আগেই রাজ্য রেলকে আরও দশটি ট্রেন আনার অনুমতি দিয়েছেন। প্রসঙ্গত এখনও পর্যন্ত মাত্র দুটি বিশেষ ট্রেন এসেছে রাজ্যে।
প্রসঙ্গত এখনও পর্যন্ত ৭৩টি ট্রেন আসার অনুমতি দিয়েছে বিহার, ৮৮টি ট্রেন এসে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে, এমনকি ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা দশের অধিক ট্রেন আসার অনুমতি দিয়েছে। ২০১১ সেনসাস অনুযায়ী, দেশের মধ্যে বাংলা থেকে বাইরে রুটি রোজগারের খোঁজে দশ বছরে বাইরে গিয়েছেন ৫.৮৫ লক্ষ মানুষ, যা দেশের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ।