বিজেপি বিরোধী আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে রাজ্যে এসেছেন ভারতীয় কৃষক ইউনিয়নের নেতা রাকেশ তিকাইত। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে নবান্নে আসেন তিনি। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যশবন্ত সিনহা। সুতরাং বৈঠক জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে শুরু হয়। তবে দেখা করার সঙ্গে সঙ্গে কৃষক নেতা একুশের নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্যের জন্য শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
এই মূহর্তে নরেন্দ্র মোদী–অমিত শাহ বিরোধী রাজনৈতিক আবর্তের প্রধান ‘মুখ’ মমতার সঙ্গে এই বৈঠককে ঘিরে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া দেশের সর্ববৃহৎ কৃষক আন্দোলনের প্রেক্ষিতকে সামনে রেখে মোদী–শাহ বিরোধী বৃহত্তর জোট গঠনের প্রক্রিয়া কার্যত কলকাতার এই বৈঠকের মধ্যে দিয়েই শুরু হল বলে সূত্রের খবর। গেরুয়া শিবিরের বিভাজনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলার মেয়ের লড়াইকে আজ কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা দেশ। সেখানে এই কৃষক নেতা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, একুশের নির্বাচনের জয় পুঁজিবাদী শক্তিকে জবাব দিয়েছে বাংলা। কৃষক আন্দোলনকে সমর্থনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বুধবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কৃষক আন্দোলন নিয়ে এই কৃষক নেতা রাকেশকে বলেন, ‘জোর করে কৃষি আইন পাশ করিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমি কৃষক আন্দোলন নিয়ে অন্য মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও কথা বলব। ফসলের ন্যূনতম দাম নিয়ে নয়া আইন করার দাবি জানানো হবে। আমি কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করি। তাছাড়া কৃষি আইন বাতিল করুক কেন্দ্রীয় সরকার। গত ৭ মাস ধরে কৃষক আন্দোলন চলছে। কেন কৃষকদের সঙ্গে কথা বলছে না কেন্দ্র? যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যগুলোকেও এক মঞ্চে আসতে হবে। কোনও একটা রাজ্যের সঙ্গে অন্যায় হলে। বাকিদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’ অর্থাৎ বিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সূত্রের খবর, বাংলার বিধানসভা নির্বাচন থেকে শুরু হওয়া ‘নো ভোট ফর বিজেপি’ ক্যাম্পেনকে এই সব রাজ্যেও নিয়ে যেতে চাইছেন কৃষক আন্দোলনের নেতারা। তবে এবার উঠবে নতুন স্লোগান, ‘আর নয় বিজেপি।’ সেই স্লোগানেই এবার সিলমোহর চাইছেন কৃষকরা, চাইছে অবিজেপি, মোদী বিরোধী দলগুলি। সে কথা আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন কৃষকনেতা রাকেশ তিকাইত।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষণ ছাড়া কিছুই দেন না প্রধানমন্ত্রী। টিকা এতদিন কেন দেওয়া হল না? এক রাজ্যেকে বিজেপি আক্রমণ করলে, বাকি রাজ্যগুলিকে রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশের গনতন্ত্র রক্ষা করতে, দেশের কৃষক, শ্রমিক, যুবদের বাঁচানোর জন্য সবাইকে এক হতে হবে। যারা বিজেপির পুরনো নেতা। তাঁরাও এই কাজে যোগ দিতে পারেন। ক্ষমতায় এসে থেকে বিজেপি খবরদারি চালাচ্ছে। কালো আইন আনা ছাড়া কোনও কাজ নেই। কেন্দ্র কৃষকদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা তাঁদের সঙ্গে আছি।’