বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখিয়ে অধিবেশন ভেস্তে দিতে চেয়েছিল বিজেপি। সেখানে রাজ্যপালকে দিয়ে প্রথম এবং শেষ লাইন পড়িয়ে সাংবিধানিক সংকট আটকে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর রাজ্যপালের গাড়ি বেরনোর পরই সাংবাদিক বৈঠক করলেন মুথ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে তাদের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী রওনা হন রাজভবনের উদ্দেশ্যে।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন বিধানসভা থেকে বেরোনোর আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বিরোধীদের বিধায়করা স্লোগান করেন, সাউটিং করেন। এরকম ঘটনা আগে বিধানসভায় ঘটেনি। এর আগে রাজ্যপালের ভাষণ বন্ধ হয়নি। এটা অসাংবিধানিক। আমরা এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। আমাদের বিধায়করা কেউ কোনও কথা বলেনি। স্পিকার নিজে হাত জোড় করে আবেদন করেছেন। আমি অনুরোধ করেছি। বিজেপি আজ যা করেছে, সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার। আমাদের কথায়, এটা বিজেপির পরিকল্পিত বিক্ষোভ। হেরেও ওদের লজ্জা নেই।’
পুরসভা নির্বাচনে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিধানসভায় বিক্ষোভে সামিল হয় বিজেপি। যার জেরে সময়মতো ভাষণ শুরু করতে পারেননি রাজ্যপাল। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ভাষণ দিতে উঠলেই বিক্ষোভ শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। বিক্ষোভের জেরে বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চান রাজ্যপাল। তাঁকে সেই মুহূর্তে আটকে নেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উভয়ের মধ্যে কথা হয়। বিক্ষোভ তখনও না থামায় রাজ্যপাল মাত্র দু’লাইন বতব্য রেখেই বেরিয়ে যান। তাঁকে বাইরে এগিয়ে দিতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিজেপির বিরুদ্ধে।
বিজেপি এই পরিস্থিতি তৈরি করে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বদনাম করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটা বাস্তবে হল না। তাই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা যায়, ‘রাজ্যপালকে শারীরিক নিগ্রহ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা বিধায়করা। মুখ্যমন্ত্রীর ইন্ধনেই এটা হয়েছে। রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা চাই, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করুন রাজ্যপাল। পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৬ ধারার থেকেও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’ কিন্তু বিষয়টি ধোপে টেকেনি। এই পরিস্থিতি কেন হল? এমনটা জানতে রাজ্যপাল বিরোধী দলনেতাকে তলব করতেই পারেন। পরিস্থিতি আয়ত্তে আসতেই বিধানসভা থেকে বেরিয়ে রাজভবন যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাষণ পাঠের জন্য রাজ্যপালকে আলাদা করে ধন্যবাদও জানান তিনি।