ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হলেও আসন সমঝোতা এখনও অধরাই রয়েছে। বাংলায় কংগ্রেস–তৃণমূলের জোট হোক চায় দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু আসন সমঝোতা নিয়ে সমস্যা আছে। ইতিমধ্যেই অসম যে নির্বাচন হয়েছে তাতে কংগ্রেসের থেকে বেশি ভোট পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেটি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ শুরু হচ্ছে। যার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বাংলায় এসেছেন কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক জিএ মির। তিনি বিধান ভবনে বৈঠকে বসেন। সেখানে জোট নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, সেখানেই প্রদেশ ও জেলা কংগ্রেসের নেতারা মিরকে জানান, তৃণমূলের সঙ্গে জোট চাইছেন না তাঁরা। বরং তাঁরা চাইছেন, বাংলায় বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট হোক।
এদিকে বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট করে বিধানসভায় দেখা গিয়েছে শূন্য মিলেছে। আবার কোনও নির্বাচনেই সাফল্য আসেনি। তাহলে বামেদের সঙ্গে জোট কেন? এই প্রশ্ন তুলেছেন দলেরই এক রাজ্য নেতা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে একক পথ চলার সিদ্ধান্ত নিক এআইসিসি বলেও মিরকে জানানো হয়। তবে বেশিরভাগ নেতাই বলেছেন, বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট করার অর্থ আত্মহত্যা করা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী নিজেও তৃণমূলের সঙ্গে জোট চাইছেন না। সে কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই কংগ্রেসের রাজ্য–জেলা স্তরের নেতারা তৃণমূলের সঙ্গে জোটের বিরোধিতা করেছেন।
অন্যদিকে শনিবার বিজেপি বিরোধী জোট নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’র ভার্চুয়াল বৈঠক হলেও তাতে যোগ দেননি তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও নেতা–নেত্রী। কংগ্রেস সদস্য তিন রাজ্যে একক লড়াই করে চূড়ান্ত পরাজয় দেখেছে। বাংলায় দুটি আসন ছাড়তে চায় তৃণমূল। তাতে রাজি নয় কংগ্রেস। এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ দেখিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অধীর চৌধুরী। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে হাজির এক প্রাক্তন বিধায়ক বলেন, ‘পর্যবেক্ষক আমাদের সকলের কথা শুনেছেন। তিনি রাহুল গান্ধীর যাত্রা নিয়ে আমাদের নানা পরামর্শ দিলেও, জোট নিয়ে একটি কথাও বলেননি। তবে পরেরবার এসে জোট নিয়ে দলের অবস্থান জানাবেন।’
আরও পড়ুন: বিজেপির রাজ্য সভাপতি–সহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা, অপরাধ কী?
এছাড়া বৈঠক শেষ করেই নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন পর্যবেক্ষক মির। জোটের কথা হলেও তা কেউ স্বীকার করতে চাইছেন না। তবে এখানের নেতাদের মতামত শুনে সেটা হাইকমান্ডকে জানাবেন মির। এই বিষয়ে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘জোট নিয়ে আমরা আমাদের কথা বলেছি। পর্যবেক্ষক কয়েকদিনের মধ্যেই আবার কলকাতায় আসবেন। তখন তিনি এআইসিসি’র বক্তব্য আমাদের জানাবেন। তিনি এই বৈঠকে আমাদের মতামত শুনেছেন।’ সূত্রের খবর, আগামী ২০ অথবা ২২ জানুয়ারির মধ্যে পর্যবেক্ষক মির ফের কলকাতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন জোট নিয়ে দলীয় অবস্থানের কথা তিনি প্রদেশ নেতৃত্বকে জানাবেন।