চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক সরকারি নার্সের। অন্তত এমনই অভিযোগ মৃতের পরিবারের। এই নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ জানিয়েছে মৃতের পরিবার। অভিযোগের তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।
মৃত আরতি দত্ত মজুমদারের স্বামী কমলেশ মজুমদারের জানান, গত ১৫ মে কর্তব্যরত অবস্থায় প্রবল জ্বরে কাহিল হয়ে পড়েন বারাসত জেলা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিস্টার ইন চার্জ আরতি দত্ত মজুমদার। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ওই হাসপাতালেই ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন সহকর্মীরা। কিন্তু সেকথা না শুনে নৈহাটিতে তাঁর বাড়িতে চলে আসেন তিনি।
বাড়িতে এসে বিশ্রাম নিলেও ক্রমশ বাড়তে থাকে দেহের তাপমাত্রা। রাতে তাঁর শরীরের তাপমাত্রা ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইটে পৌঁছে যায়। এর পর তাঁকে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনরা। সেখান থেকে তাঁকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহেরু মেডিক্যা কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জ্বরের রোগীকে নদিয়া জেলায় চিকিৎসা করা যাবে না বলে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বারাকপুরের করোনা হাসপাতালে।
বারাকপুর করোনা হাসপাতালে আরতিদেবীর লালারসের নমুনা পরীক্ষা ২ বার নেগেটিভ আসে। ওদিকে ক্রমশ অবনতি হতে থাকে তাঁর শারীরিক অবস্থার। এই পরিস্থিতিতে গত ২৫ মে তাঁকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, সেখানে কার্যত কোনও চিকিৎসাই হয়নি আরতিদেবীর। রিপোর্ট আনার ঝঞ্ঝাট মেটানোর আগেই মৃত্যু হয় তাঁর। এমনকী সন্দেহভাজন করোনা রোগী হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার আরজি কর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ওই নার্স। তার পর তাঁর লালারসে নমুনা পরীক্ষা রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে।
পরিবারের দাবি, কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে আরতিদেবীর। তাঁর স্বামীর প্রশ্ন, কর্তব্যরত একজন নার্সের করোনা যদি এই পরিণতি হয় তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে? গোটা ঘটনা স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছেন তিনি। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি আরজি কর কর্তৃপক্ষের।