নানা আলোচনা, মতামত নেওয়ার পর বেঙ্গল লাইনের সিদ্ধান্তই যে ভুল তা কার্যত সিলমোহর দিল সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটি। মোর্চা গঠন সঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি বলেছিলেন বামফ্রন্টের শরিকরাও। সূত্রের খবর, একুশের নির্বাচনে মোর্চা গঠন করে লড়াই করেছিল সিপিআইএম। এই ফর্মুলা নিয়ে ভিন রাজ্যের প্রতিনিধিরা তুলোধনা করেন বেঙ্গল লাইন নেতৃত্বকে। ওই প্রতিনিধিদের দাবি, পার্টি কংগ্রেসের গৃহীত নীতি মানা হয়নি। তখন রে রে করে ওঠেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম, আভাস রায় চৌধুরী, রবিন দেবরা। তাঁরা পাল্টা যুক্তি দেন, অসাম্প্রদায়িক সমস্ত দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। পার্টি কংগ্রেসের এটাই ছিল সিদ্ধান্ত। সেই পথেই জোট হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা কারাত লাইনের নেতা সোচ্চার হয়ে সব দায় বেঙ্গল লাইনের উপর চাপিয়ে দেয়। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কেরল, তামিলনাড়ুর প্রতিনিধিদের প্রশ্ন, কেন কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা হল? আর তাতেই কোণঠাসা হল বেঙ্গল লাইন নেতৃত্ব। কেরলে পর পর দু’বার ক্ষমতায় এসেছে সিপিআইএম। সেখানে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে গিয়ে লড়াই করা হয়েছিল। তাই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধার কারণে পশ্চিমবঙ্গে বামেরা একটাও আসন পায়নি বলে তাঁদের দাবি।
তামিলনাড়ুতে বিধানসভা নির্বাচনেও ভাল ফল হয়েছে বামেদের। অথচ বাংলায় মুখ থুবড়ে পড়েছে সংগঠন। এই নিয়ে কার্যত কোণঠাসা করে দেওয়া হয় বেঙ্গল লাইনকে। সূত্রের খবর, কী উদ্যোগ সংগঠনের পক্ষ থেকে নেওয়া হল যা কোনও কাজেই এল না? এই প্রশ্ন শুনতে হয়েছে বিমান বসুদের। উল্টে হাতে এল বিরাট শূন্য বলে কটাক্ষ সহ্য করতে হয়। আজ কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের দ্বিতীয় দিন। তিনদিনের এই বৈঠক শেষ হবে রবিবার।
উল্লেখ্য, কারাটপন্থী নেতাদের মতে, বৃহত্তর বাম ঐক্য ও বাম শক্তিকে একত্রিত রাখার ভাবনাতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত ছিল। তাহলে সব দোষ কি বেঙ্গল লাইনের? ব্রিগেডে তো এক মঞ্চে ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি ও অধীর চৌধুরী। এমনকী ওই মঞ্চ থেকে সংযুক্ত মোর্চার কথা ঘোষণা করেছিলেন সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক। তাহলে আজ কেন বাংলার নেতাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে? উঠছে প্রশ্ন।