পঞ্চায়েত নির্বাচনে একের পর এক অশান্তির ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের অধীনে আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেইমতো গত সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভায় এই প্রস্তাব পাশ হয়েছে। ফলে ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের অধীনে আনার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা নেই। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা মতো ভাঙড়, কাশিপুর এবং কেএলসি থানাকে ভেঙে ৯ টি থানা করা হবে। এ নিয়ে জোর কদমে প্রস্তুতি চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। জানা গিয়েছে, সেখানে মহিলা থানাও তৈরি করা হবে। শুধু তাই নয় ভাঙড়ে গোয়েন্দা বিভাগের আরও একটি কার্যালয় করার কথাও চিন্তা ভাবনা করছে কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুন: ভাঙড়ে ৩ থেকে বেড়ে থানা হচ্ছে ৯টি, দেখে নিন তালিকা
প্রাথমিকভাবে, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের যে কার্যালয় রয়েছে সেটি লালবাজারে অবস্থিত। সেখান থেকে গোয়েন্দা বিভাগ যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনা করে থাকে। তবে এবার ভাঙড়ে গোয়েন্দা বিভাগের আরেকটি কার্যালয় গড়ার কথা চিন্তাভাবনা করছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, ওই গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে সব মিলিয়ে ১০০ জন পুলিশ কর্মী মোতায়ন করা হবে। যার মধ্যে থাকবেন ইন্সপেক্টর এবং কনস্টেবল পদমর্যাদার পুলিশ। সেখানে স্পেশাল ব্রাঞ্চ এবং ওয়্যারলেস ব্রাঞ্চের অফিস তৈরি করার চিন্তা ভাবনা করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ভাঙড়ে আলাদা ডিভিশন তৈরি করার পাশাপাশি আলাদা ট্রাফিক গার্ড তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে পুলিশ। ভাঙড়ে ডিভিশন তৈরি করে সেখানে একজন ডেপুটি কমিশনারকে মোতায়ন করা হবে। ভাঙড়ের সমস্ত থানা তাঁর তত্ত্বাবধানে থাকবে। যদিও ডিসি অফিস কোথায় তৈরি করা হবে তা নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে পুলিশ। তবে সে ক্ষেত্রে ছাড়পত্র মিললেই এই ডিভিশন তৈরি হবে।
প্রসঙ্গত, আইনশৃঙ্খলার রক্ষার জন্য ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের অধীনে আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি ফলে ওই এলাকায় যানযট নিয়ন্ত্রণ করবে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। তার জন্য সম্প্রতি ট্রাফিকের ডিসি (২) ওই এলাকা ঘুরে দেখেছেন। এদিকে, ভাঙড়ে নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর কাজও শুরু করে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। কলকাতায় বহু সিসিটিভি রয়েছে। তাই ভাঙড়কেও সিসিটিভির নজরদারিতে আনার জন্য এই পদক্ষেপ। বৃহস্পতিবার ভাঙড়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। মোট এদিন তিনটি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, যার মধ্যে বাসন্তী হাইওয়ের ঘটকপুকুরে ৩ টি ক্যামেরা এবং হাতিশালা মোরে ৪টি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এই সমস্ত ক্যামেরা পরীক্ষামূলকভাবে লাগানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গোটা ভাঙড় কার্যত সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হবে। এর মাধ্যমে ভাঙড়ে নজরদারি চালানো হবে।