মাথায় বিঁধে থাকা সূচ, খুলি খুলে নাক দিয়ে টেনে বার করলেন চিকিৎসকেরা। নাকের মধ্যে ঢুকে সোজা মাথায় বিঁধে গিয়েছিল সূচ! মাথার করোটি খুলে সেটি বার করার চেষ্টাও করেছিলেন চিকিৎসকরা। তবে বিফল হওয়ায়, যন্ত্রের সাহায্যে নাক দিয়েই সূচটি টেনে বার করে রোগীকে বাঁচালেন চিকিৎসকরা। জটিল এই অস্ত্রোপচার করে রোগীকে বাঁচিয়েছেন ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেসের চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে এখন সুস্থই রয়েছেন রোগী। তবে এই অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে রোগীর মাথার খুলি খুলে ফেলতে হয়েছিল চিকিৎসকদের। যা সাধারণত ধাতব কোনও বস্তু মাথায় ঢুকে গেলে করা হয়।
রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেহালা ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা শশধর দত্ত সম্প্রতি অতিরিক্ত মদ্যপান করে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় সংজ্ঞা হারিয়ে রাস্তার মধ্যে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সেখানেই কোনওভাবে তার নাকে লোহার বস্তা সেলাই করার সূচটি ঢুকে যায়। তবে কীভাবে তাঁর নাকে ওই ধাতব সূচটি ঢুকে গেল, পরে আর সেটা মনে করতে পারেননি তিনি।
নাক দিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকায়, তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁর সিটি স্ক্যান ও এক্স-রে করান। তখনই চিকিৎসকরা দেখেন শশধরের নাকের ভিতরে ওই সূঁচ ঢুকে মাথার অভ্যান্তরীণ অংশে আটকে রয়েছে। এরপরে চিকিৎসকরা ওই রোগীর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর অস্ত্রোপচারের জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। সেই দলের মধ্যে ছিলেন ডা. চন্দ্রমৌলী বালাসুব্রমনিয়ান, নিউরোসার্জন ডা. আদিত্য মন্ত্রী, হেড অ্যান্ড নেক সার্জন ডা. অমিতকুমার ঘোষ, স্পাইনাল অ্যান্ড নিউরো সার্জন ডা. ক্রিস্টোফার জার্ভার প্রমূখ।
টানা পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় রোগীর মাথায় আটকে থাকা সূচ সফলভাবে বের করে নেন চিকিৎসকরা। এপ্রসঙ্গে ডা. অমিতকুমার ঘোষ জানিয়েছেন, যখন ওই ব্যক্তির মাথার খুলি খোলা হয়, তখন দেখা যায়, তার মাথার অনেকটা গভীরে ওই সূচটি আটকে রয়েছে। প্রথমে হাত দিয়ে তা টেনে বার করার চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ওই সূচটি এমনভাবে বিঁধে ছিল যে, চিকিৎসকদের ওই পদ্ধতি বিফলে যায়। তারপরই দ্বিতীয় পদ্ধতি হিসেবে রনজার ফরসেপ যন্ত্র (দেখতে অনেকটা কাঁকড়ার সরু দাঁড়ার মতো)নাকের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে ৬ ইঞ্চি লম্বা ওই ধাতব সূচটি টেনে বার করা হয়।