পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাস পরীক্ষা হচ্ছে খুব ধীর গতিতে। করোনা পরীক্ষার পদ্ধতি জটিল করে পরীক্ষার গতি কমাচ্ছে প্রশাসন। যার ফলে সংক্রমিত হচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সংবাদসংস্থা রয়েটার্সকে চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ করল চিকিৎসকদের সংগঠন।
পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাস পরীক্ষার সংখ্যা জনসংখ্যার অনুপাতে খুব কম বলে সোমবারই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্থা নাইসেডের নির্দেশক শান্তা দত্ত। সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, কিটের কোনও ঘাটতি না থাকলেও তাদের কাছে নমুনা পাঠাচ্ছে না রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার তার পর থেকে শুরু করেন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের নেতা অর্জুন দাশগুপ্ত।
তিনি বলেন, 'কাউকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহ করে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠালে হয় রাজ্য সরকার তা ফেরত পাঠাচ্ছে, নইলে রিপোর্ট আসছে ৩-৪ দিন পরে। যার ফলে সঠিক সময়ে রোগীকে আইসোলেশনে পাঠানো যাচ্ছে না। এর ফলে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মীদের সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ছে।'
পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাস পরীক্ষার হাল যে খারাপ তা প্রথম জানিয়েছিল হিন্দুস্তান টাইমস। রয়েটার্সের রিপোর্ট অনুসারে, গোটা দেশে যেখানে প্রতি ১০ লক্ষ জনসংখ্যায় প্রায় ১৫৭ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষা হয়েছে সেখানে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা বর্তমানে ৩৩.৭।
চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষার পদ্ধতি জটিল করে তোলা হয়েছে। লাল ফিতের ফাঁসে আটকানো গোটা প্রক্রিয়া। যার ফলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি বাড়ছে। এর জেরে এখনো পর্যন্ত কলকাতার ৪টি সরকারি ও ২ টি বেসরকারি হাসপাতালের পরিষেবা প্রভাবিত হয়েছে।
করোনাভাইরাসে মৃত্যু নির্ধারণ করতে রাজ্য সরকার যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়েছে তার কারণ নির্ধারণের মাপকাঠি নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন চিকিৎসকরা। করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গ সরকার গোপন করছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
বৃক্করোগ বিশেষজ্ঞ প্রীতম সেনগুপ্ত সম্প্রতি ফেসবুকে লিখেছেন, 'কোনও রোগী শ্বাসকার্যে অক্ষম হয়ে মারা গেলেও তাকে করোনাভাইরাসে মৃত বলে ঘোষণা করছে না কমিটি।' তিনি লিখেছেন, 'মৃত্যু নিয়ে সত্যের সঙ্গে নগ্ন মিথ্যাচার হচ্ছে।' সঙ্গে ওই করোনা রোগীর ফুসফুসের এক্সরে রিপোর্ট ও সিটি স্ক্যানের রিপোর্টও প্রকাশ করেছেন তিনি।
এব্যাপারে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন জানিয়ছেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার COVID 19 পরীক্ষার জন্য রাজ্যকে পর্যাপ্ত কিট দিচ্ছে না। এক্ষেত্রে রাজ্যের নিজের কিট কেনার অধিকার নেই।' তাঁর দাবি, কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনেই পশ্চিমবঙ্গে যাবতীয় পরীক্ষা হচ্ছে।