করোনা প্রতিরোধে রাজ্য সরকার তৎপর হলেও পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন ঘোষণার এখনও কোনও পরিকল্পনা নেই। সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বাইরে থেকে বহু মানুষ আসায় করোনা সংক্রমণ রোধ করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। তবে গতবারের মতো এবারও করোনা রোধ করতে রাজ্য সরকার সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সোমবার মমতা বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে রোজ একাধিক বৈঠক করছে রাজ্য সরকার। এছাড়া মুখ্যসচিবের অধীনে করোনা প্রতিরোধে বিশেষ টাক্স ফোর্স তৈরি করা হয়েছে। অকারণে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। এটা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ।’
এদিন রাজ্যে করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্য নাম না করে বিজেপিকে দায়ী করেন মমতা। বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারের জন্য বহু লোক বাইরে থেকে যাতায়াত করছে। অনেকে মাসের পর মাস এখানে পড়ে রয়েছেন। তারা করোনা ছড়াচ্ছে। এখন কী করবো। নির্বাচন চলছে। প্রচার তো করবেই।’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘রাজ্যে ২০০০ গুরুতর করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছে। এদের কোমর্বিডিটি রয়েছে। আমাদের কাছে করোনার ওষুধ ও ভ্যাকসিন নেই। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে ওষুধ, ভ্যাকসিন ও অক্সিজেন চেয়েছি। তার পরেও বাজার থেকে ওষুধ কেনার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার।’
তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকার ৪ দিনে ১,০০০ বেড বাড়িয়েছে। ৩-৪ দিনের মধ্যে ৪,৫০০ বেড বেড়ে যাবে। রাজ্যে মোট ১০০টি হাসপাতাল করোনা মোকাবিলায় তৈরি করা হচ্ছে। ৫৮টি বেসরকারি হাসপাতালেও পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। তবে নির্বাচনের কাছে বহু ভবন কমিশনের দখলে থাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমস্যা হচ্ছে। সেজন্য আমরা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও বণিকমহলের কাছে সাহায্য চেয়েছি’।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করেন, ‘নাইট কার্ফু করোনা প্রতিরোধের উপায় বলে মনে করে না রাজ্য সরকার। বদলে ভোটপ্রচারে রাশ টানা প্রয়োজন বলে মনে হয়। তাই আমি নিজের ভোটপ্রচার কমিয়ে দিয়েছি। কলকাতায় আমি আর কোনও সভা করবো না। শুধুমাত্র ২৬ এপ্রিল শেষ দিনে কলকাতায় আমার একটা সভা রয়েছে।’
সঙ্গে তিনি জানান, আগামিকাল থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুলের গরমের ছুটি শুরু হয়ে যাবে। জুন মাস পর্যন্ত ছুটি চলবে। তার পর পরিস্তিতি বুঝে বিবেচনা করবে সরকার। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যাপারে এখনো কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।