অমিত শাহের রাজ্যসফরের মধ্যেই সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের অস্থায়ী পার্টি অফিসে রাজ্য কমিটির প্রথম বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে অমিত শাহের নাম শুনে ক্ষুব্ধ হন মমতা। নির্দেশ দেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলুন। সেটাই যথেষ্ট। ওনার নাম আমার সামনে নেবেন না।
এদিন CAA নিয়ে মমতা বলেন, ‘রোজকার মিথ্যে কথা বলাটা অপরাধ। আর মালিকের নির্দেশে একই কথা বারবার, তোতা পাখির বুলি। এটা মিথ্যাচারের ভ্রষ্টাচার। উনি যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন, সেটা কাদের ভোটে? নাগরিক না হলে তারা ভোট দিল কী করে’?
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে শাহের সমালোচনার পালটা মমতা বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসকে নিয়ে ওনাকে ভাবতে হবে না। উনি দিল্লি দেখুন। উনি উত্তর প্রদেশ দেখুন। মধ্যপ্রদেশে সাংবাদিকদের সঙ্গে কী হচ্ছে দেখুন। জাহাঙ্গিরপুরীতে কি হয়েছে সেটা দেখা উচিন। বাংলা ওনাদের কাছে নেই। তাই বাংলাকে নিয়ে এত নোংরা কথা বলা উচিত নয়’।
উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য ঘোষণা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘বিজেপি সিপিএমের বি টিম। সিপিএম বিজেপির লিংকম্যান। এদের কাজই সব কিছু টুকরো করা। ওরা মনও টুকরো করে দিতে পারে। এরা হিন্দুর সাথে মুসলিমের ডিভোর্স করাতে চায়। বাঙালির সঙ্গে রাজবংশীর ডিভোর্স করাতে চায়। বাঙালির সঙ্গে বাঙালির ডিভোর্স করাতে চায়। দেশের জন্য কী করেছেন উনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে ইডি সিবিআই বাদ দিয়ে কোনও কাজ করেছেন উনি? ইদের দিনটাও ছাড়েনি। সেদিনও দাঙ্গা করিয়েছে’।
অমিত শাহের ভাষণে রাজ্যে ৩৫৫ ধারা লাগুর ইঙ্গিত নিয়ে ক্ষুব্ধ মমতার মন্তব্য, ‘তার মানে উনি এগুলো হতে দেবেন? তার মানে উনিই ষড়যন্ত্রকারী? বেড়াল ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়েছে। এটা কোনও দিন হবে না। আমি আপনাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু বিএসএফকে রাজ্যের ওপর কথা বলতে নির্দেশ দেবেন না। আপনাদের দায়িত্ব গোরপপাচার রোখা, অনুপ্রবেশ রোখা। আপনার দায়িত্ব এই এলাকায় শান্তি রক্ষা করা। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বুলডোজার চালানো আপনার কাজ নয়। তাই এটা করবেন না। আগুন নিয়ে খেলবেন না। গণতান্ত্রিকভাবে মানুষ তার জবাব দেবে’।
এদিন দলীয় কার্যালয়ে বসে একাধিক সরকারি কর্মসূচি ঘোষণা করেন মমতা। জানান আগামী ১০ মে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভা করবেন তিনি। পরদিন দলীয় বৈঠকে যোগ দেবেন সেখানে। ১২ মে ঝাড়গ্রামে দলীয় সভা করবেন তিনি।