মহালয়ার পর থেকেই রাস্তায় তিলধারনের জায়গা নেই। কারণ বিপুল পরিমাণ মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছেন। একদিকে শপিং অন্যদিকে প্যান্ডেল হপিং। শনিবার ও রবিবার এই ছবিই দেখা গেল উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতায়। দুর্গাপুজো এখনও তিনদিন বাকি। তার মধ্যেই মারাত্মক ভিড়ের জেরে তুঙ্গে উঠেছে যানজট। বিভিন্ন প্যান্ডেলে মানুষের লম্বা লাইন সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। হাতিবাগান থেকে টালিগঞ্জ ভিড়ে চিরেচ্যাপ্টা হওয়ার জোগাড়। এখনও বহু মণ্ডপে প্রতিমা আসেনি। কিন্তু মণ্ডপ দেখতেই ভিড় জমাচ্ছেন মানুষজন। আর তার ফলে ট্রাফিক জ্যাম বাড়ছে। মেট্রোতেও মারাত্মক ভিড় হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি সামলাতে বিপুল পরিমাণ পুলিশকে নামানো হচ্ছে দুর্গাপুজোর সময়। তার উপর ব্যাপক নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে তিলোত্তমা কলকাতাকে। শ্রীভূমি স্পোর্টিং, চেতলা অগ্রণী, সুরুচি সংঘ–সহ নানা দুর্গাপুজোর মণ্ডপে এখনই উপচে পড়ছে ভিড়। সেখানে মহাষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পরিস্থিতি কোন জায়গায় যাবে তা ভেবে কপালে ভাঁজ পড়ছে পুলিশের। দুর্গাপুজোয় আলোয় আলোকিত তিলোত্তমার বুকে ঘুরে বেড়ান অনেকে। রাতভর আড্ডা, খাওয়াদাওয়া চলতে থাকে। তাই আনন্দের উৎসবে নিরাপত্তা জোরদার করতে ময়দানে নামছে কলকাতা পুলিশও। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে শহরে চলবে কড়া নজরদারি।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটতে চলেছে? পুলিশ সূত্রে খবর, চতুর্থী থেকেই নজরদারি বাড়তে শুরু করবে। এখনই রাস্তায় বিপুল পরিমাণ মানুষ নেমে পড়েছেন। তাই এই ভিড় সামলাতে চতুর্থীর দিন থাকছে ৪ হাজার পুলিশ কর্মী। আর পঞ্চমী থেকে নবমী পর্যন্ত শহরে মোতায়েন থাকবে ৮ হাজার পুলিশকর্মী। নিরাপত্তা থেকে যানজট সবটা সামলাতে এই পরিমাণ পুলিশও না কম পড়ে যায়। কারণ জেলা থেকে মানুষ শহরে আসবেন। সারারাত বাস, ট্রেন, মেট্রো খোলা থাকবে। তাই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য থাকবেন ৬ হাজার পুলিশ। এছাড়া গোটা শহরটি নজরে রাখতে ৫১টি ওয়াচ টাওয়ার থাকবে।
আরও পড়ুন: ‘ছেলে ঘুমাচ্ছে, কেউ ডাকবি না’, রানাঘাটে ছেলের মৃতদেহ আগলে রেখে মায়ের কথা
আর কী ব্যবস্থা থাকছে? এই বিপুল পরিমাণ পুলিশ কর্মীর পাশাপাশি ১৬ জন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার থাকবেন। ৮২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার থাকছেন। ২০০ জন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার রাখা হচ্ছে নজরদারিতে। ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স শহরে ছড়িয়ে রাখা থাকবে। ১৬টি ক্যুইক রেসপন্স টিম শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মোতায়েন থাকবে। এই বিষয়ে সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘একাধিক নেতা–নেত্রী পাইলট লাগিয়ে দুর্গাপুজো দেখতে যান। এটায় আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু তার জন্য রাস্তা বন্ধ করা হবে না। কোনওরকম বিশেষ কেয়ার যেন না হয়। আমি যদি কোনও রাস্তা বন্ধ দেখতে পাই তাহলে নিজেই অ্যাকশন নেব।’