শুধু ২০১৪ সালে নয়। ২০১২ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের নামের তালিকা অয়ন শীলের অফিসে পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) অফিসাররা। আর সেই সূত্রেই এবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবকে তলব করল ইডি। ২০১২ সালের টেটের প্যানেল সংক্রান্ত নথি এবং তথ্য নিয়ে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে অতিরিক্ত নিয়োগ নিয়ে তথ্য চেয়েছে ইডি। বেশিরভাগ তথ্যই আগে সিবিআইকে দেওয়া হয়েছিল। সেগুলি নিয়ে তদন্ত করছে সিবিআই। আজ পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি যান ইডি দফতরে।
ইডি কী তথ্য পেয়েছে? ইডি সূত্রে খবর, ২০১৪ সালের প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে বড় ভূমিকা ছিল তাপস মণ্ডলের। এখন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া মানিক ভট্টাচার্যও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি থাকাকালীন দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। তাই মানিক ভট্টাচার্যকেও গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের জেরা করে নানা তথ্য হাতে এসেছে। বিপুল টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি দিতে বড় ভূমিকা ছিল তাপস–মানিকদের। সেই টাকার ভাগ পৌঁছেছে কুন্তল ঘোষ ও অন্যান্য প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের কাছে। তাই এই তলব করা হয়েছে। নথি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দুর্নীতি হয়েছিল কিনা।
আর কী জানা যাচ্ছে? তাপস মণ্ডল–সহ অন্যান্যদের জেরা করতেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য বলে আদালতে দাবি করে তদন্তকারী সংস্থা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর দাবি, তাপস মণ্ডল ও অন্যান্য অভিযুক্তদের মুখোমুখি জেরায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মিলেছে। একেকজন গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে একেকজনের নাম বেরিয়ে আসছে। দীর্ঘতর হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি। অয়ন শীলের সল্টলেকের ফ্ল্যাট থেকে ২০১২ এবং ২০১৪ সালে টেট নিয়োগের নথিও পেয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অফিসাররা। আর তার ভিত্তিতেই এবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবকে তলব করল ইডি। তলব পেয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন দুই প্রতিনিধি।
কেন এমন জরুরি তলব? সূত্রের খবর, ২০১২ এবং ২০১৪ সালে প্রাথমিক টেটের নথি নিয়ে মঙ্গলবার পর্ষদের সচিবকে তলব করা হয়েছিল। তলব পেয়ে মঙ্গলবার বেলায় পর্ষদের দুই প্রতিনিধি সেখানে যান। তাঁদের সঙ্গে ছিল নথিপত্র। সেসব নথি খতিয়ে দেখবে ইডি। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি প্রমাণ হিসাবে পেয়েছে ইডি। সেই সমস্ত বিষয় নিয়েও ইডি বিশদে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। তবে আপাতত তাঁরা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রতিনিধিদের থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে চান। গৌতম পাল বলেন, ‘সচিবের পদ এই মুহূর্তে ফাঁকা। তাঁর পরিবর্তে দু’জন অফিসার গিয়েছেন।’