বয়ফ্রেন্ডকে সঙ্গে নিয়ে বড়বাজার–পোস্তার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছিল কলকাতা পুলিশের এক প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। ওই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরিও এই অভিযোগে চলে যায়। এমনকী এই অভিযোগ প্রমাণিতও হয়েছিল। তবে তাতেও তোলাবাজির কাজ থেকে সরে আসেনি ওই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে একসময় কর্মরত ওই সিভিক ভলান্টিয়ার রপ্ত করেছিল নাকা চেকিং। আর নাকা চেকিংয়ের কাজ জেনে সেটাকে কাজে লাগিয়ে তোলা আদায় করতে থাকে। ইতিমধ্যেই পোস্তা থানার পুলিশ ওই মহিলা প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সোমা গুহকে এবং তার বয়ফ্রেন্ড আমির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে।
এই দু’জনের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ১৪ লক্ষ টাকা। পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, প্রায় ৪০ লাখ টাকা এভাবেই তোলাবাজি করেছে এই প্রেমিক যুগল। টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ওই প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার মহিলা গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত থাকার সময় দু’একটি থানায় ডিউটি করেছিল। বড়বাজার–পোস্তা সহ কলকাতার নানা এলাকায় অভিযুক্ত নাকা ডিউটিতে যোগ দিতেন পুলিশের সঙ্গে। এভাবেই সবকিছু তার জানা হয়ে গিয়েছিল। কোনও মহিলাকে সন্দেহভাজন মনে হলে তাঁকে আটক করে তল্লাশি করত এই সিভিক ভলান্টিয়ার। সুতরাং এই কাজে সে পটু হয়ে উঠেছিল।
এদিকে এই কাজের মধ্য দিয়ে রপ্ত করেছিল নাকা চেকিংয়ের কাজ। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ডিউটি করার সময় সোমা জানতে পারে, পোস্তা–বড়বাজার–গিরিশ পার্ক এবং মধ্য কলকাতার নানা এলাকায় কেমন করে হাওলার টাকা, চোরাই গয়না হাতবদল হয়। তাই এখান থেকেই তোলাবাজির রাস্তা বের করে নেয় সে। এই কালো ব্যবসা থেকে কেমন করে বাড়তি রোজগার করতে হয় সেটায় দক্ষ হয়ে ওঠে। সেই কৌশলকেই কাজে লাগিয়ে বয়ফ্রেন্ডকে সঙ্গে নিয়ে তোলাবাজি অব্যাহত রাখে। চাকরি থাকার সময় এবং চাকরি চলে যাওয়ার পরও এভাবেই তোলাবাজি করে গিয়েছে মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার। চাকরি চলে যাওয়ার পর পুলিশ সেজে এই তোলাবাজি করত। সঙ্গী ছিল তার বয়ফ্রেন্ড।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোয় বেড়ে গেল সবজির দাম, বাজারে গিয়ে ছ্যাঁকা খাচ্ছেন গৃহকর্তারা
অন্যদিকে তদন্তে উঠে এসেছে, পোস্তা এলাকায় সেপ্টেম্বর মাসে এক ব্যবসায়ীকে রীতিমতো ভয় দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই সোমা গুহ। এই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার এত কিছুর পরও কোনও সিজার লিস্ট পেশ করেনি। তখনই সন্দেহ হয় ওই ব্যবসায়ীর। তখন ওই ব্যবসায়ী পোস্তা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এমন অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে পোস্তা থানার পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করতেই সব সামনে চলে আসে। এই অভিযোগেই চাকরি চলে গিয়েছে সোমা গুহের। তবে অব্যাহত ছিল তোলাবাজি। গিরিশ পার্ক এলাকায় এক স্বর্ণব্যবসায়ীকে চমকে ৮ লাখ টাকার সোনার গয়না হাতিয়ে নেয় সোমা ও তার বয়ফ্রেন্ড বলে অভিযোগ। তাই দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়।