কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এখন বিজেপি নেতা। এই বিচারপতির পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দলে যুক্ত হওয়াটা উচিত কাজ হয়নি বলে নিজের মতামত ব্যক্ত করলেন মেঘালয় হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, রাজনৈতিক দলে যুক্ত হওয়ার ফলে নানা মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচার উদ্দেশ্যমূলক বলে প্রশ্ন তোলার সুযোগ তৈরি হয়ে যায়। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘রাজনৈতিক দলগুলিরও একটা দায়িত্ববোধ থাকা প্রয়োজন।’
এদিকে এক আইনের সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থাকার সময় কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রমাণ–সহ দুর্নীতির অভিযোগ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান তিনি। তাই তাঁকে মাদ্রাজ থেকে মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি করে সরিয়ে দেওয়া হয়। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এই সব দুর্নীতিগ্রস্তদের প্রভাবশালী বন্ধুরা শীর্ষস্তরে বসে আছেন। তাঁদের দিয়েই আমাকে মেঘালয়ে বদলি করে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।’ তবে তিনি মানুষকে সঠিক বিচার পাইয়ে দিয়েছিলেন বলেই আজও তাঁকে তামিলনাড়ু এবং মেঘালয় থেকে অনেকে ফোন করেন বলে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দণ্ডী–কাণ্ডকে নির্বাচনী প্রচারে আনলেন সুকান্ত, পাল্টা জবাব দিলেন তৃণমূল প্রার্থী
অন্যদিকে প্রচলিত কলেজিয়াম পদ্ধতিকে সমর্থন করেননি প্রাক্তন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আমাদের দেশ চলছে, সেটি নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু এই ব্যবস্থার পরিবর্তে আর একটি কার্যকর ব্যবস্থা যত দিন না উঠে আসছে ততদিন এইসব নিয়েই চলতে হবে। এই হাইকোর্টকে বাতিল লোকেদের ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ কলকাতায় দেশের প্রথম হাইকোর্ট। অনেক ঐতিহ্য। এখানের যে সব বিচারপতিদের উত্তর–পূর্বের ছোট ছোট হাইকোর্টে পাঠানো উচিত সেটা যাচ্ছে না। তাঁদের কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে।’
এখানেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যোগ নিয়ে মুখ খোলেন মেঘালয়ের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। প্রাক্তন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নিষ্ঠা ও সততা নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু যেভাবে ইস্তফা দিয়ে তিনি একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দিলেন সেটা উচিত কাজ হয়নি বলে আমি মনে করি।’ যদিও এখন তিনি তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হবেন বিজেপির বলে সূত্রের খবর।