নদিয়ার হাঁসখালি ধর্ষণ ও খুনের মামলায় আগেই নিগৃহীতার পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও সেই নির্দেশের পর দীর্ঘ ৮ মাস ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ মেলেনি। উল্টে মামলা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করে ‘লিগ্যাল এইড’। তাতেই রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। তবে আজ, মঙ্গলবার লিগ্যাল সার্ভিস থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল হাঁসখালিতে? চলতি বছরের ৪ এপ্রিল নদিয়ার হাঁসখালিতে এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতার ছেলের জন্মদিনের পার্টিতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ওই তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে বহিষ্কার করেছে দল। তারপরই ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় রাজ্য–রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দেয়। এমনকী তিনটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করা হয়। এই ঘটনায় অর্থসাহায্য পাওয়ার আলাদা প্রকল্পও রয়েছে। কিন্তু ঘটনার আট মাস পরও রবিবার পর্যন্ত সে টাকা পায়নি নির্যাতিতার পরিবার। এই ঘটনা নিয়ে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি তোলা হলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা।
এদিকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে মৃতের পরিবারকে এখনও পর্যন্ত নিদির্ষ্ট প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিপূরণ দেয়নি রাজ্য সরকার। এই ইস্যুতে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতি স্পষ্টতই লিগাল এইড সার্ভিস অথরিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘লিগাল এইড নানারকম টালবাহানা করছে। শুনানি পিছনোরও আবেদন করছে। এত গুরুত্বপূর্ণ মামলায় আপনাদের এই দায়সারা ভাব কেন?’
অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্টে ভর্ৎসনা শুনে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হয়। তবে অন্য আর একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। যেখানে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয়েছিল। এবার সেই মামলার শুনানি হবে ৩০ জানুয়ারি। প্রধান বিচারপতি লিগ্যাল এইডের আইনজীবীকে বলেন, ‘লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটিকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। কিছু অস্পষ্ট শব্দ বলে বিষয়টিকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনাদের জন্য কত মানুষ ভুগতে হচ্ছে।’