করোনাভাইরাসের সতর্কতা হিসাবে পুজোমণ্ডপে যাওয়া যাবে না। এটা জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু করোনাভাইরাস কী সত্যিই আছে বাংলায়? এখন এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ রবিবার নিউ মার্কেট থেকে গড়িয়াহাট পর্যন্ত যে মানুষের ঢল নেমেছিল তাতে এই প্রশ্ন ওঠাই দস্তুর। জামাকাপড় কেনাকাটা করতে যে ভিড় চোখে পড়েছিল তাতে করোনাভাইরাসকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে। রাজপথ চলে গিয়েছে জনতার দখলে। আর ভিড় সামলাতে নাভিশ্বাস উঠেছিল পুলিশেরও।
কলকাতা হাইকোর্টের রায় পুজোর কেনাকাটায় একচুল প্রভাব ফেলতে পারেনি। এই ট্রেন্ড জারি থাকলে পুজোর সময় জনস্রোত আটকানোই তাঁদের কাছে চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়াবে। এমনকী দুপুরে বৃষ্টির সময়ে অনেকে ভিড় জমান রেস্তরাঁয়। বৃষ্টি থামতেই বাজার–শপিং মল–সহ নানা জায়গায় মানুষের ঢল দেখা যায়। রীতিমতো রাস্তায় দাঁড়িয়ে জিনিসপত্রের দর–দাম চলে জোরকদমে।
তাতে ব্যবসায়ীদেরও মন ভাল হয়ে যায়। তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন এবার বোধহয় কেনাকাটায় ধস নামবে। সেখানে জোয়ার এসেছে বিকিকিনিতে। নিউ মার্কেট–সহ হাতিবাগান এবং গড়িয়াহাট এলাকায় ভিড়ের ছবিই স্পষ্ট হয়েছে। লেক মলের বাইরে লম্বা লাইন দেখে একজন পথিকবর জিজ্ঞাসা করে বসলেন, এখানে কী টিকা দেওয়া হচ্ছে? আর জনতা–জনার্দন বলছেন, বছরে একবার বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো আসে। বাড়িতে বসে থাকব নাকি। কেনাকাটা তো করতেই হবে। এটাই আমাদের সংস্কৃতি। গড়িয়াহাটে বান্ধবীদের সঙ্গে কেনাকাটা করতে আসা বাবলি বৌদি বলেন, ‘এটাই তো সময় কেনাকাটা করার। এখন কেনাকাটা না করলে তো আর করাই হবে না। দুপুরে এসেছিলাম একটু ফাঁকা হবে ভেবে। কিন্তু সব জায়গাতেই তো দেখছি লম্বা লাইন।’
রাসবিহারীর মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘এটা যদি শুরু হয় তাহলে শেষ কোথায়? দুর্গাপুজো না জানি কি হবে! ভিড়ে তো আমাদেরই চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাওয়ার অবস্থা। তার উপর গাড়ির চাপ। সবমিলিয়ে এখন আমরা সাঁড়াশি চাপে পড়েছি। নিউ মার্কেট থেকে মানুষ লেক মলে আসছে। আবার গড়িয়াহাটে যাচ্ছে। যার জন্য ভিড় বাড়ছে।’