হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন কলকাতার ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক অতীন ঘোষের মা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তিনি। তবে কঠিন লড়াই চালিয়েও জীবনযুদ্ধে শেষ পর্যন্ত জিততে পারেননি অতীনের মা গীতা ঘোষ। প্রসঙ্গত, গত ২৭ জানুয়ারি সন্ধ্যা দেওয়ার সময় অতীনের মায়ের শাড়িতে আগুন ধরে যায়। এর জেরে তিনিও গুরুতর ভাবে অগ্নিদগ্ধ হন। রিপোর্ট অনুযায়ী, গীতার ঘোষের শরীরের ৬৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। এই আবহে হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। প্রথমে স্থানীয় এক হাসপাতালেই ভরতি করা হয়েছিল অতীনের মাকে। পরে তাঁকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছিল। বিগত ৩ দিন ধরে সেই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন গীতা ঘোষ। তবে আজ সকালে ৮৫ বছর বয়সে হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। মাতৃহারা হয়ে শোকে ডুবেছেন অতীন ঘোষ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর কলকাতার নলীন সরকার স্ট্রিটের বাড়িতে থাকেন গীতা ঘোষ। গত শনিবার পৌনে সাতটা নাগাদ সন্ধ্যা দিতে গিয়ে এই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। প্রদীপ জ্বালাতে গিয়ে দেশলাই কাঠি থেকে আগুন ধরে যায় তাঁর শাড়িতে। জানা গিয়েছে, প্রদীপ জ্বালাতে গিয়ে একটি দেশলাই জ্বালান গীতা ঘোষ। তবে তাতে প্রদীপ জ্বলেনি। সেই সময় দেশলাই কাঠিটা পাশে ফেলে দিয়ে অপর একটি কাঠি জ্বালান তিনি। তবে ফেলে দেওয়া দেশলাই কাঠি যে পুরোপুরি নিভে যায়নি, তা খেয়াল করেননি তিনি। সেখান থেকেই তাঁর শাড়িতে আগুন ধরে যায়। তবে প্রথমদিকে সেদিকে তাঁর নজর ছিল না। পরে আগুন লাগার ঘটনা যখন তিনি বুঝে ওঠেন, তখন আগুন অনেকটা ছড়িয়ে পড়েছে।
গীতা ঘোষের চিৎকার শুনে ঠাকুরঘরে ছুটে আসেন অতীন ঘোষের দাদা এবং ভাইরা। তাঁরাই আগুন নেভান। তখনই স্থানীয় এক হাসপাতালে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অতীনের মাকে। যে সময় ঘটনাটি ঘটেছিল সেই সময় অতীন ঘোষ বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এদিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আরজি কর হাসপাতালে। বিগত ৩ দিন ধরে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল আরজি কর হাসপাতালে। তবে চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচাতে পারেননি। জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর চিকিৎসা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন চিকিৎসরকার। অনেক জটিলতা দেখা দিয়েছিল।
এদিকে গত কয়েকদিনে অসাবধানতার বশে কলকাতা শহরে একাধিক বৃদ্ধ-বৃদ্ধারই পুড়ে যাওয়ার খবর সামনে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে বয়স্কদের জন্য একাধিক পরামর্শ-সহ নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের ‘প্রণাম’ প্রকল্পের মাধ্যমে বয়স্কদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই সব পরামর্শ বুঝিয়ে দিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে লালবাজারের তরফ থেকে।