এই শুক্রবারই ট্রামের ১৫০ বছরের পথচলা পূর্ণ হবে। তবে এবার কলকাতার কয়েকটি হেরিটেজ রুটে ট্রামযাত্রাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আশা করা যাচ্ছে কিছু হেরিটেজ রুটে ট্রামের পরিবহণকে ফিরিয়ে আনা যাবে। শহরের কিছু হেরিটেজ পয়েন্টকে ছুঁয়ে যাবে এই ট্রাম। কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়া, কফি হাউজ, স্বামী বিবেকানন্দর বাড়ি, বিধান সরণী, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বাড়ি সহ কয়েকটি জায়গাকে ছুঁয়ে যাবে এই রুট।
আসলে ওয়েলিংটন স্কোয়ারে মেট্রো রেলের কিছু কাজকর্ম হচ্ছিল। সেকারণে রুট নম্বর ৫কে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। তবে এবার যাবতীয় জট কাটিয়ে এই রুটে ট্রাম সার্ভিসকে ফের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার এনিয়ে পরিবহণ দফতর ও কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনকে অনুরোধ করেন, এই রুটে ট্রাম ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। তিনি একটি ইংরাজি সংবাদ মাধ্যমের কাছে এনিয়ে স্মৃতি চারণা করেছেন। তিনি বলেন, যখন আমি গোয়েঙ্কা কলেজে পড়তাম এই ৫ নম্বর রুটটা আমার রোজকার রুটিনের মধ্যে পড়ত। শেষের বগিতে চেপে বসতাম। এই শহর ট্রামকে ছাড়া অসম্পূর্ণ।
তিনি জানিয়েছেন ট্রাম অত্য়ন্ত পরিচ্ছন্ন পরিবহণের মাধ্যম। বাচ্চা, বয়স্ক মানুষ, মহিলাদের কাছে এই ট্রাম অত্যন্ত ভালো পরিবহণ।
এদিকে ৫ নম্বর রুটটি শ্য়ামবাজার থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত বিস্তৃত। সেই রুটে প্রায় ১০ মাস ট্রাম চলাচল স্থগিত ছিল। তবে মঙ্গলবার রাতে সেখানে ফের ট্রামের ট্রায়াল রান হয়েছে। গোটা শহরের বিভিন্ন এলাকায় জুড়ে একটা সময় ট্রাম চলাচল করত। তবে সেসব আজ অতীত। তবে কিছু রুটে ফের ট্রামকে ফেরাতে চাইছে সরকার।
আসলে কলকাতা আর ট্রাম যেন একটা সময় একই শব্দবন্ধনীতে উচ্চারিত হত। কিন্তু বর্তমান জেট যুগে গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি ট্রাম। ক্রমে আরও ঘিঞ্জি হয়েছে শহর। ট্রাম নানা সময়ে যানজটের কারণ হয়ে উঠেছে। এসবের জেরে ধীরে ধীরে শহরের বুক থেকে উঠে যেতে শুরু করে ট্রাম। তবে এই ট্রামকে ঘিরে অনেকেরই নানা সোনালী স্মৃতি রয়েছে। শহরতলি থেকে একটা সময় অনেকেই কলকাতায় আসতেন ট্রামে চড়ার টানে। গতি হয়তো সেভাবে নেই, তবুও ট্রামকে ঘিরে যেন অন্য আবেগ। তাছাড়া কলকাতার ট্রামের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাসও রয়েছে। এবার সেই পুরানো ট্রামের কিছু রুটকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইছে সরকার।