বেআইনি নির্মাণ যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে গার্ডেনরিচের ঘটনা। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার শহরে বেআইনি নির্মাণের তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করছে লালবাজার। অনলাইনে এই সমস্ত তথ্য থাকবে। তা থেকে সহজেই জানা যাবে শহরে কতগুলি বেআইনি বাড়ি তৈরি হয়েছে বা কোথায় কোথায় বেআইনি নির্মাণ আছে। সেই সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে থাকার ফলে তড়িঘড়ি পুলিশ এবং পুর প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
আরও পড়ুনঃ গার্ডেনরিচে হেলে পড়া বাড়ির অংশ ভেঙে ফেলতে চায় পুরসভা, মালিককে পাঠাল নোটিশ
জানা গিয়েছে, এ নিয়ে ১০টি ডিভিশনের ডিসি ও সমস্ত থানার ওসি এবং পুর কর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। তাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে ১৫ দিন পর পর এ নিয়ে রিপোর্ট করা হবে। লালবাজারের তরফে প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যদি এলাকায় কোনও এলাকায় বহুতল নির্মাণ হয় তাহলে তা খতিয়ে দেখতে হবে। নির্মীয়মাণ বহুতলটি বেআইনি কিনা সে ক্ষেত্রে যদি পুলিশের সন্দেহ হয় তাহলে জায়গার মালিকের নাম, বাড়িটির ঠিকানা, প্রোমোটারের নাম, পরিচয় বা তার বিরুদ্ধে আগে কোনও মামলা রয়েছে কিনা সেই সমস্ত তথ্য আপলোড করতে হবে। তাছাড়া নির্মাণটির ছবি সমস্ত কোণ থেকে তুলে আপলোড করতে হবে। যদি সে ক্ষেত্রে বাড়িটি বেআইনি হয় তাহলে পুরসভার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, যদি কোনও বাড়ি বেআইনি বলে অভিযোগ ওঠে তাহলে সেক্ষেত্রে খতিয়ে দেখা হবে যে সংশ্লিষ্ট অ্যাপে এই সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে কিনা? যদি সেই তথ্য না থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে ডেকে পাঠানো হবে। সে ক্ষেত্রে জানতে চাওয়া হবে পুলিশের কারও কোনও গাফিলতি ছিল কিনা। আর যদি গাফিলতি খুঁজে পাওয়া যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেবে লালবাজার।
আবার সাধারণ নাগরিকরাও এই সংক্রান্ত অভিযোগ পুলিশের কাছে বাড়িতে বসে জানাতে পারবেন। তা নিয়ে আগামী দিনে কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইটে একটি নতুন লিঙ্ক দেওয়া হবে। তার মাধ্যমেই অভিযোগ জানানো যাবে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই এই এলাকায় বেআইনি বহুতল সম্পর্কে তথ্য পেতে পুরসভার তরফেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বেআইনি বাড়িগুলি চিহ্নিত করার পর প্রয়োজনে ওই বাড়ির মালিকদের নোটিশ পাঠানো হতে পারে। তাছাড়া সম্প্রতি কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল একটি বৈঠক করেছেন। তারপর গার্ডেনরিচে আরও কোনও বহুতল রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেক্ষেত্রে পুরসভার তালিকার সঙ্গে থানার দেওয়া তালিকা খতিয়ে দেখা হবে। তার ভিত্তিতে সেখানে বেআইনি বহুতলের হদিস পাওয়া যাবে বলে মনে করছে লালবাজার।