বিচারবিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মেঘালয় যাওয়ার আগে এনিয়ে তিনি মন্তব্য করেন। এদিন তিনি বলেন, বিচার বিভাগের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা চাই। যদি কেন্দ্রীয় সরকার তাদের প্রতিনিধি কলেজিয়ামে রাখে তাহলে রাজ্যও তাদের প্রতিনিধিকে কলেজিয়ামে রাখবে।এখন বিচারব্যবস্থায় রাজ্যের কোনও প্রতিনিধি থাকে না। হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে কলেজিয়াম কোনও সুপারিশ পাঠালে সেটা কেন্দ্র বাতিল করে দিতে পারে। কেন্দ্রের প্রতি সমর্থন না থাকলেই বিচারপতিদের নাম বাদ যাচ্ছে। আসলে কেন্দ্র সরাসরি বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করছে। আমরা সেটা চাই না। আমরা চাই সবার জন্য বিচার, গণতান্ত্রিক অধিকারের বিচার।
এর সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, সর্বত্র এজেন্সির হস্তক্ষেপ। গণতন্ত্র বিপদের মধ্যে রয়েছে। আমরা বিচার ব্যবস্থাকে বিশ্বাস করি। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের পুরোপুরি আস্থা আছে।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, আমরা বিচারব্য়বস্থার স্বাধীনতা চাই। হাস্যকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। গণতন্ত্র বিপন্ন। এখন সব জায়গায় কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করছে।
এভাবেই সরাসরি কেন্দ্রকে নিশানা করে তির ছুঁড়লেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কলেজিয়ামের মাধ্যম বিচারপতিদের নিয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যে নানা চর্চা দেশ জুড়ে। কলেজিয়ামে সরকারি প্রতিনিধি রাখার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে খবর। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়ায় সরকারি প্রতিনিধিদের শামিল করার ব্যাপারেও তিনি আবেদন করেছিলেন বলে খবর। এবার পালটা এনিয়ে নতুন প্রসঙ্গ তুলে দিলেন মমতা।
বিচার ব্যবস্থাতেও কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতার পক্ষেও সওয়াল করলেন তিনি। এর সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন সর্বত্র এজেন্সির হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটকে কেন্দ্র করে তুলকালাম হয়ে যায়। আইনজীবীদের একাংশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এমনকী দেশের বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরাও ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিনিধি হিসাবে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছিলেন। কিন্তু সংঘাতের ঘটনার প্রমাণ হিসাবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তাঁরা এখনও পাননি। তবে এনিয়ে অবশ্য বিশেষ কিছু বলেননি মুখ্যমন্ত্রী।
বরং বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। এদিকে কংগ্রেস সহ দেশের একাধিক বিরোধী দলও সম্প্রতি অভিযোগ তুলেছিলেন বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এতে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা কতটা বজায় থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা।