প্রথম ঘটনা ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের। ছেলে দেবাশিস চ্যাটার্জি (৪৭) মারা যাওয়ার বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও সে ব্যাপারে পুলিশকে কিছু জানায়নি বেহালার এক পরিবার। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানতে পেরে পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
দ্বিতীয় ঘটনা ২০১৯–এরই জুলাই মাসের। এবার মৃত্যু হয় মা ছায়া চ্যাটার্জির (৮২)। আর এবারও জানানো হয়নি পুলিশকে। মৃতদেহর সঙ্গেই বেশ কয়েকদিন কাটান বাবা ও মেয়ে। পরে জানাজানি হওয়ায় দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
তৃতীয় এবং শেষ ঘটনা এ বছর চলতি মাসের ১৯ তারিখের (বুধবার)। বেহালার ওই বাড়ি থেকে ফের উদ্ধার হয় দেহ। এবার মারা যান বাবা রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি (৮৬)। অন্তত দু’দিন তাঁর দেহ আগলে ছিলেন মেয়ে নীলাঞ্জনা (৫৬)। আগের মতোই এবারও জানানো হয়নি পুলিশকে। প্রতিবেশীরা দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। বুধবার সকালে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন। তাঁর মেয়ে নীলাঞ্জনা চ্যাটার্জি মানসিকভাবে অসুস্থ। তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সন্দীপ মালাকার বলেন, ‘কেউ মারা যাওয়ার পর তাঁদের দেহ আগলে বসে থাকার ঘটনা এ পরিবারে এটা প্রথম নয়। তাই প্রতিবেশীরা যখন দুর্গন্ধ পেতে শুরু করেন, বোঝাই গিয়েছিল, ফের আগের ঘটনা ঘটেছে। তাই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানো হয়।’
পরিবারের ছোট ছেলে দেবাশিস চ্যাটার্জি নিরাপত্তারক্ষী এবং কুরিয়র বয় হিসেবে কাজ করলেও মৃত্যুর আগে তিনি কর্মহীন ছিলেন। পরিবারের কর্তা রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জির পেনশন থেকেই সবার ভরণপোষণ চলত। গত বছর স্থানীয় থানার পুলিশ এই পরিবারকে কিছু আর্থিক সাহায্যও করে।