ছিলেন রুমাল হঠাৎই হয়ে গেলেন বিড়াল। আর তাতেই রাজনীতির অলিন্দে জোর জল্পনার জন্ম নেয়। কারণ বিধানসভায় গিয়ে স্পিকারের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দিলেন হরিপালের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। শুক্রবার বেচারামের অনুগামীরাও সিঙ্গুরে গণ–পদত্যাগ করবেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন। কিন্তু দেখা গেল, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সঙ্গে সাক্ষাতের পর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন তিনি।
জানা গিয়েছে, দলের রাজ্য সভাপতির নির্দেশে পদত্যাগের অবস্থান থেকে সরে জেলায় ফিরেছেন বেচারাম মান্না। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সংঘাতের আবহ চলার মধ্যেই বেচারামের ইস্তফায় অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। তড়িঘড়ি ড্যামেজ কন্ট্রোলের পথ নেন তাঁরা। বেচারাম মান্নাকে তৃণমূল ভবনে তলব করেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় যাবত বেচারামের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি বলে খবর। তারপরই অভিমান ছেড়ে দলের প্রতি মনোনিবেশ করেন বেচারাম মান্না। অর্থাৎ আবার রুমালের আকার নেন তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।
বেচারামের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পর স্বস্তি ফিরল ঘাসফুল শিবিরে। হুগলি জেলা তৃণমূলে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে বেচারামের বিরোধ দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি দলের ব্লক সভাপতি নির্বাচন ঘিরে সেই সংঘাত চরমে ওঠে। তাতেই প্রকাশ্যে মুখ খুলে দল ছাড়ার কথা জানিয়ে দেন বেচারাম। কিন্তু বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আবার সিঙ্গুরই ছিল মমতার রাজনৈতিক কেরিয়ারে টার্নিং পয়েন্ট। সেখানে এখন গোলমাল হলে চলবে কেন! তাই এই উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই বিষয়টি নজরে আসার পরে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে মাঠে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, রবীন্দ্রনাথবাবুর ক্ষোভের বরফ গলাতে রাতেই বেচারাম মান্নাকে ফোন করে ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী। তার অনুগামী গোবিন্দ ধারাকে সরিয়ে মহাদেব দাসকে পদে বসানোর জন্য নির্দেশ দেন দলনেত্রী। এভাবে চললে হরিপাল কেন্দ্রে তিনি আর টিকিট পাবেন না বলেও দলনেত্রীর তরফে বার্তা দেওয়া হয় বেচারামকে। অবশেষে মান ভাঙল বেচারামের।