মহরমের দিন বাজনা শব্দবিধি মেনে বাজাতে হবে। ইতিমধ্যেই এই নির্দেশ জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকী কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা পুলিশকে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলেছেন। একই সঙ্গে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে শব্দবিধি মেনে বাজনা বাজানো হচ্ছে কি না সেটাও নজরদারি করতে বলা হয়েছে। তারপরই পুলিশের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, মহরম উপলক্ষ্যে শুক্রবার এবং শনিবার শহরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হবে। আজ শুক্রবার ২৫০০ এবং শনিবার ৪২০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে গোটা শহরে। মহরমের শোভাযাত্রা চলাকালীন সংশ্লিষ্ট এলাকায় নজরদারিতে থাকবেন স্থানীয় থানার অফিসাররা।
কেমন ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে? কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, যেখানে বড় শোভাযাত্রা চলবে সেখানে দায়িত্বে থাকবেন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসাররা। আর স্পর্শকাতর এলাকায় থাকবে কড়া পুলিশ পিকেট। তবে কোথাও সমস্যা দেখা দিলে যাতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায় তার জন্য রিজার্ভ ফোর্স রাখা হয়েছে। এছাড়া পেট্রলিং টিম কলকাতা জুড়ে টহল দেবে। মোট পাঁচটি বড় তাজিয়া ও মিছিল বেরনোর কথা রয়েছে। এক, পর্তুগিজ চার্চ থেকে শুরু করে ক্যানিং স্ট্রিট, লালবাজার, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট হয়ে মিছিল আসবে শিয়ালদায়। শামসুর হুদা এবং রাজাবাজার থেকেও একটি শোভাযাত্রা আসবে শিয়ালদায়। এরপর তিনটি শোভাযাত্রা একসঙ্গে বেলেঘাটায় যাবে। সুতরাং এই রাস্তায় এবং শিয়ালদায় বাড়তি পুলিশ রাখা হচ্ছে।
আর কী ব্যবস্থা থাকছে? লালবাজার সূত্রে খবর, মহরমের শোভাযাত্রা যখন চলবে তখন এপিসি রোড, বেলেঘাটা, মৌলালি এলাকায় যানজটের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। আর কলুটোলা থেকে রবীন্দ্র সরণি, ডোরিনা ক্রসিং, খিদিরপুর, ওয়াটগঞ্জ হয়ে আর একটি তাজিয়া আসবে সাহেবপুরে। এমনকী কলকাতা শহরে আরও ছোট–বড় একাধিক তাজিয়া এই দু’দিনে বেরনোর কথা আছে। তাজিয়া বেরনোর সময় প্রয়োজনে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ রাস্তা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হতে পারে বলে খবর। কোনও গণ্ডগোল যাতে না হয় তার জন্য কুইক রেসপন্স টিম রাখা থাকবে। গোটা শহর উত্তর থেকে দক্ষিণ কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যারাকপুর সেনা ছাউনিতে পাক গুপ্তচরের জের, তদন্ত করতে উদ্যোগ নিল সিবিআই
আর কী জানা যাচ্ছে? দু’দিন আগেই নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, মহরমকে সামনে রেখে ভুয়ো ভিডিয়ো বানাতে পারে বিজেপি। আর তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে হিংসার পরিবেশ তৈরি করতে পারে। তাতে বাংলার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হতে পারে। আবার গতকাল রাজ্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বৈঠকে যে ছক তৈরি হয়েছে তা ফাঁস করেছেন। সেখানেও এমন সব দাবি করেছেন তিনি। যার পরই বিজেপি বিধায়করা ওয়াকআউট করেন। এই আবহে মহরমের দিন বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট ও লালবাজার স্ট্রিট ক্রসিং এবং গোটা মধ্য কলকাতায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পোদ্দার কোর্টের সামনের রাস্তা বন্ধের জেরে যানবাহনের চাপ বাড়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর উপর। গিরিশ পার্ক থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত যানজট দেখা দেয়। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে তৈরি কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ।