ঘোষণা হয়েছিল তাঁরা আসবেন। তাঁদের নেতৃত্বেই কলকাতার বুকে রোড শো করবে বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু তবুও মিছিলে গরহাজির ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার শেষে মিছিলকে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায় ও অর্জুন সিং। আর ঠিক তার পরের দিনই মঙ্গলবার এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন বৈশাখী।
সাক্ষাৎকারের প্রথমেই এদিন বৈশাখী বলেন, ‘প্রথমেই আমি সমস্ত বিজেপি কার্যকর্তাদের কাছে ক্ষমা চাইব যে কালকের মিছিলে আমি উপস্থিত থাকতে পারিনি। যদিও সেটা আমি আগেই নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম এবং যেতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশও করেছি।’ কিন্তু মিছিলে না যাওয়ার পেছনে কারণ কী? বৈশাখীর জবাব, ‘আমার শরীর একেবারেই ভাল নেই। দীর্ঘ যাত্রা করে ভুবনেশ্বর থেকে ফেরার পর আমার ও শোভন— কারও শরীরই একেবারে ভাল নেই। মূলত, সেই কারণেই কাল মিছিলে থাকতে পারিনি।’
কিন্তু শোভন চট্টোপাধায়কেও কালকের মিছিলে দেখা যায়নি। তার কারণ হিসেবে বৈশাখীর সাফাই, ‘আমি তাও কাল শেষ একবার চেষ্টা করেছিলাম যে যদি আমার পায়ের ফোলা কমে তবে আমি যাব। কিন্তু আমি চলা–ফেরা করার মতো অবস্থায় ছিলাম না। আমার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে শোভনবাবুও আমায় ছেড়ে যেতে পারেননি। কারণ বাড়িতে বড় কেউ ছিল না। তাই তিনিও মিছিলে যেতে পারেননি।’
একইসঙ্গে এদিন বৈশাখী জানিয়েছেন যে এই মিছিলের আয়োজক রাকেশ সিং তাঁকে আমন্ত্রণ জানালেও বিজেপি দফতর থেকে আসা একটা ফোনে তাঁকে জানানো হয় যে এই মিছিলে তিনি আমন্ত্রিত নন। বৈশাখীর কথায়, ‘রাকেশ সিংয়ের পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে আমার নাম ছাড়াও শোভনবাবু, কৈলাসজির নাম ছিল। বিজেপি–র মিডিয়া সেল থেকে জানতে পারি মিছিলে আমন্ত্রিতদের তালিকায় শঙ্কুদেব পণ্ডা, দেবজিতের নাম ঢুকেছে। কারও নাম ঢুকলেও আমার নাম সেখানে থেকে বাদ পড়তে আমি দেখিনি। কিন্তু সোমবার সকালে হঠাৎ করে বিজেপি–র অফিস থেকে কেউ একজন ফোন করে আমাকে জানায় যে এটা আমার মিছিল নয়। এটা শোভনবাবুর মিছিল।’
নাম থাকুক বা না থাকুক বিজেপি–র যে কোনও মিছিলে যাওয়াকে কর্তব্য বলে মনে করেন বলে এদিন জানিয়েছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘শোভনবাবুর মিছিল হলেও আমি যেতাম। কারণ আমি বিজেপি কর্মী। আমার নাম থাকুক বা না থাকুক যদি খবর থাকে তবে বিজেপি–র যে কোনও মিছিলে যাওয়াকে আমি আমার কর্তব্য বলে মনে করি।’ ইতিমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কিন্তু সে সব বিতর্কে কান দিতে চান না বৈশাখী। তাঁর কথায়, ‘কিছু বিতর্ক কেউ কেউ তৈরি করার চেষ্টা করেছে এটা অস্বীকার করতে পারব না। যাঁরা করেছেন তাঁরা বিজেপি–র মূল নেতৃত্বের কেউ নন।’
এদিন বৈশাখী আরও বলেন, ‘কাজের দিক থেকে আমার ও শোভনবাবুর তরফে কোনও ঘাটতি নেই। একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে আমরা অংশ নিয়েছি। আর আমার মনে হয় না এটা প্রথম মিছিল বা এটাই শেষ মিছিল। এর পরেও বহু মিছিল হবে। আর আমাদের তাতে পা মেলাতে দেখা যাবে। আর আমরা না থাকলে বিজেপি–র মিছিল হবে না তা কিন্তু নয়।’