প্রোমোটারের থাবায় পড়ল এবার ক্লাবের একাংশ। আর তার জেরে ওই ক্লাবের একটা অংশ ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। দক্ষিণ কলকাতার বুকে এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ক্লাবের ওই অংশকে ভাঙা নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয় নেতাজিনগর এলাকায়। বিজয় সংঘ ক্লাবের একটা অংশ ভেঙে ফেলতেই গণ্ডগোল শুরু হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই ক্লাব ৬০ বছর ধরে চলছে। ওই জায়গায় নানা সামাজিক কাজ এবং একাধিক পুজোর আয়োজন করা হয়। সেখানে হঠাৎ রজত চক্রবর্তী বলে এক ব্যক্তি ওই জায়গা দখল করতে চাইছেন প্রোমোটারি করার জন্য। তাই ভেঙে ফেলা হয়েছে ক্লাবের ওই অংশ।
এই অভিযোগ সামনে আসতেই তেতে উঠেছেন স্থানীয় মানুষজন ও ক্লাবের সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট জায়গা ছাড়তে নারাজ ক্লাবের সদস্যরা। সেখানে রজত চক্রবর্তীর দাবি, ওই জায়গাটি যাঁর, সেই ব্যক্তির ‘পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি’ রয়েছে তাঁর হাতে। তাই ওই জায়গা দখল করার অধিকার নেই বিজয় সংঘ ক্লাবের। পাল্টা এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, এই ক্লাবের জায়গা দখল করা নিয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ আছে। সুতরাং এটি বিচারাধীন বিষয়। তারপরও এই ক্লাব ভাঙাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ঘটনাস্থলে ডিসি এসএসডি বিদিশা কলিতার নেতৃত্বে এসে পৌঁছয় বিরাট পুলিশ বাহিনী। তাতে আরও উত্তেজনা বাড়ে।
আরও পড়ুন: ‘আমি বললে আবার বিস্ফোরণ হবে’, সুদীপ–কুণাল–তাপস দ্বৈরথে নিরাপদ দূরত্ব ফিরহাদের
এদিকে এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে সেটা কেউ কল্পনা করতে পারছেন না। কারণ এই ক্লাবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এখানকার মানুষের আবেগ ও স্মৃতি। এলাকার এক বাসিন্দা এই বিষয়ে বলেন, ‘এই ক্লাব আজকের নয়, দীর্ঘদিনের। এখানে পুজো–সহ নানা সামাজিক কাজ করা হয়। মানুষের আবেগ, স্মৃতি এবং ভালবাসা জড়িয়ে আছে। কোনও মালিককে আমরা কোনওদিন এখানে দেখিনি। এখন একজন দালাল আসছেন রজত চক্রবর্তী নামে। আরও একজন আইনজীবী আসছেন। রজত চক্রবর্তী ক্লাবটা তুলে দিতে চাইছে। আমরা সেটা চাইছি না। এই বিষয়টি নিয়ে কোর্টের অর্ডার রয়েছে। কোর্ট সব বিষয়টা জানে। তাই এখন কোনও ভাঙাভাঙি চাইছি না।’
অন্যদিকে এখানে প্রোমোটারি করার ছক কষা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় ক্লাবের সদস্য এবং বাসিন্দাদের। এই বিষয়টি এলাকার সঙ্গে অত্যন্ত ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। সেখানে প্রোমোটার রাজের থাবা পড়লে মানুষের হৃদয়ে আঘাত লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ক্লাবের এক সদস্য বলেন, ‘আদালতের স্থগিতাদেশের অর্ডার রয়েছে। কিন্তু ওরা সেটা মানছে না। প্রোমোটার ভাঙচুর করতে শুরু করেছে ক্লাবের একটা অংশ। দালাল ও পুলিশের সহযোগিতায় কাজটা করা হচ্ছে। আমাদের ক্লাবটা জমিদার দ্বারকানাথ চক্রবর্তী দিয়েছিলেন। তিনি থাকতে দিয়েছিলেন। রজত চক্রবর্তী জোর করে এই সম্পত্তি নিতে চাইছেন।’