গত শুক্রবার বেহালার চৌরাস্তার কাছে রাস্তা পারাপার করার সময় একটি লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ৭ বছরের খুদে পড়ুয়া সৌরনীল সরকারের। এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় কলকাতায়। ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করে সরকার। এবার রাজ্যের অন্যান্য স্কুলেও যাতে এই ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। আদালতেরই এক আইনজীবী এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন।
আরও পড়ুন: বেহালার পথ দুর্ঘটনায় রিপোর্ট তলব করল নবান্ন, কোনা এক্সপ্রেসে আটক ঘাতক লরিচালক
আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে মামলাকারী আইনজীবী মুকুল বিশ্বাসের আর্জি, দুর্ঘটনা এড়াতে রাজ্যের সমস্ত স্কুলের সামনে ট্রাফিক সিগন্যালের ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু ট্রাফিক সিগন্যালের ব্যবস্থাই নয়, সিগন্যাল মানা হচ্ছে কি না তার ওপরও নজরদারি চালাতে হবে। স্কুলে পড়ুয়াদের প্রবেশ এবং বেরোনোর সময় ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকতে হবে স্কুলের সামনের রাস্তায়। সে ক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশ কীভাবে কাজ করবে তারও গাইডলাইন ঠিক করে দিতে হবে। আদালত যেন সেই গাইডলাইন ঠিক করে দেয় সে বিষয়ে নির্দিষ্ট ভাবে মামলায় আর্জি জানিয়েছেন আইনজীবী। এই ধরনের চার দফা আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বেহালার চৌরাস্তায় ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। ট্রাফিক পুলিশের তরফ থেকেও একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মামলাকারীর আর্জি, স্কুলে পড়ুয়াদের প্রবেশ এবং বেরোনোর সময় ঠিকমতো যাতে গাইডলাইন মানা হয় সে ব্যাপারে নির্দেশিকা দিক আদালত। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বহু স্কুলের সামনেই রাস্তা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে স্কুলের সামনে বা কাছাকাছি রাস্তায় যাতে গাড়ি আস্তে চালানো হয় সে বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী। মামলাকারীর বক্তব্য, গাড়ি আস্তে চালানোর বিষয়টি তিনটি ভাষাতে লিখতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলা, হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও জাতীয় সড়কের পাশাপাশি অন্যান্য রাস্তার ধারেও অবস্থিত স্কুলের পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য স্পিড ব্রেকার দেওয়ার ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছেন মুকুল বিশ্বাস।
মামলাকারীর হয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন আইনজীবী নিলাদ্রী শেখর ঘোষ এবং সৌরভ মণ্ডল। তাঁরা বলেন, ‘বেহালার ঘটনা আমাদের সকলের চোখ খুলে দিয়েছে। এরকম বহু স্কুল রয়েছে রাস্তার পাশে। তাই আমরা চাই যাতে এই ধরনের আর কোনও দুর্ঘটনা না ঘটুক। আর কোনও প্রাণ না যায়। এবিষয়ে স্কুলগুলির জন্য আলাদা করে ট্রাফিক গাইডলাইন তৈরি করার আর্জি জানানো হয়েছে। আশা করছি আদালত সেই মতো ব্যবস্থা নেবে।’