আজ, শুক্রবার সকালে বেহালায় মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা ঘটল। মাটিবোঝাই লরি সরাসরি ধাক্কা দেয় পড়ুয়া ও তার বাবাকে। আর তার জেরে প্রাণ গেল বড়িশা হাইস্কুলের প্রাইমারি সেকশনের খুদে পড়ুয়ার। আর বাবা এখন এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা বিভাগে চিকিৎসাধীন। এই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা বেহালা চত্ত্বর। এমনকী মৃতদেহ আটকে রেখে চলছে তুমুল বিক্ষোভ। উত্তেজিত স্থানীয় জনতা সরকারি বাসে ভাঙচুর চালায়। আর পুলিশের ভ্যানে অগ্নিসংযোগ ঘটনায় বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকটি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে বলে খবর। হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ওই লরি চালককে আটক করেছে হাওড়া ট্র্যাফিক পুলিশ। তাঁকে কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এবার বেহালার পথ দুর্ঘটনার রিপোর্ট তলব করল নবান্ন।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ সকালে বাবার সঙ্গে রাস্তা পেরিয়ে স্কুল যাওয়ার সময় দ্বিতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়াকে ধাক্কা মারে মাটিবোঝাই লরি। তাতেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় খুদের। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তার বাবাকে। বাবা এখন এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা বিভাগে চিকিৎসাধীন। আর খুদের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। এই ঘটনার প্রতিবাদে পড়ুয়ার মৃতদেহ আটকে রেখে বেহালার রাস্তায় চলছে তুমুল বিক্ষোভ। পুলিশের গাড়ি এবং একটি মোটবাইকে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। এখন সেখানে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে লরিটি নিয়ে পালাচ্ছিল চালক। বাবলাতলার কাছে তাঁকে আটক করা হয়।
এদিকে এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পথচলতি মানুষের বিক্ষোভের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ডায়মন্ড হারবার রোড। কলকাতা পুরসভার মাটিবোঝাই লরির বিরুদ্ধে পিষে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ট্রাফিকের অব্যবস্থা নিয়ে সুর সপ্তমে চড়িয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ট্রাফিকের কোনও ব্যবস্থা এখানে নেই। পুলিশ এখানে ঘুষ খায়। গোটা ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে পুলিশের উপর। ফলে পুলিশ সেখানে গিয়ে এই অবরোধ তুলতে হিমসিম খাচ্ছে। স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুতে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বেহালায়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যে, স্থানীয়রা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে পুলিশের ভ্যানে। বেশ কয়েকটি সরকারি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, ‘ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে নজর রাখা হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাকে ঋণ দিতে চেয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্ক, দেওয়াল হয়ে দাঁড়াল মোদী সরকার, বঞ্চনার অভিযোগ
অন্যদিকে এই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনার পর লরিচালককে ধরা গেলেও পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাতেই আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা পরিস্থিতি। তাই উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নামানো হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনীকে। পুলিশের পক্ষ থেকে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তখন পাল্টা উত্তেজিত জনতার ছোড়া পাথরে আহত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশকর্মী। রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে বেহালা। এক মহিলার মুখে কাঁদানে গ্যাসের সেল লেগেছে বলেও অভিযোগ। তাতে ক্ষত হয়েছে বলে অভিযোগ।