আনন্দপুরকাণ্ডে আগেই গ্রেফতার হয়েছে ৭ জন। আর এবার মুম্বই থেকে আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এর ফলে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট আটজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার মুম্বই থেকে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির নাম শুকদেব সুকুমার সূত্রধর। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, নেতাজি নগরের যে ফ্ল্যাটে শুভজিৎ মণ্ডল এবং তার চালককে আটকে রাখা হয়েছিল সেই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিল এই শুকদেব। মূলত কয়েক কোটি টাকা হাতানোর জন্যই শুভজিৎকে ফাঁসানোর পরিকল্পনায় বিক্রম দাসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল ধৃত ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবক গাড়িতেই ছিল না, আনন্দপুরকাণ্ডে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব! ধৃত ১
লালবাজার জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখা শুক্রবার রাতে মুম্বইয়ের জুহু থেকে শুকদেবকে গ্রেফতার করেছে। বছর ৩৯–এর শুকদেব ওই এলাকারই বাসিন্দা। বিক্রমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার সম্পর্কে তথ্য জানতে পারেন তদন্তকারীরা। আরও জানা গিয়েছে, শুভজিৎকে অপহরণের সময় শুকদেব নেতাজি নগরের ফ্ল্যাটেই ছিল। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিক্রম দাসকে পুলিশ আগে গ্রেফতার করেছে। তদন্তকারীদের দাবি, বিক্রম এবং তার সঙ্গীরা চেয়েছিল শুভজিতের কাছ থেকে মোটা টাকা হাতাতে। সেই কারণেই তাকে ফ্ল্যাটে আটকে রেখে একেবারে পরিকল্পনামাফিক তার বিরুদ্ধে মিথ্যে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে ওই টাকা বিক্রম এবং অন্যান্যরা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করতে চেয়েছিল।
তদন্তে জানা গিয়েছে, গত ১ ডিসেম্বর ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। ফলে সে ক্ষেত্রে শুভজিৎকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। পুলিশের অনুমান, পরিকল্পনা করেই ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। তবে এর পিছনে কী শুধুই টাকা হাতানোর উদ্দেশ্য ছিল? নাকি আরও অন্যান্য উদ্দেশ্য ছিল? তা জানার জন্য ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। শুকদেবকে শনিবার কলকাতায় এনে আলিপুর আদালতে তোলা হয় সেখানে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এর আগে এই ঘটনায় মূলচক্রী বিক্রম দাস এবং দাস ও সুশান্ত মণ্ডলকে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছিল নেতাজি নগর থানা পুলিশ।
উল্লেখ্য, সপ্তাহ খানেক আগে একটি গাড়িতে বেঁহুশ করে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু যে যুবকের বিরুদ্ধে তিনি ধর্ষণের অভিযোগ জানছিলেন পালটা সেই যুবক অপহরণের অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ প্রথমে শৌভিক দাস নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। ওই শৌভিকই শুভজিৎকে ফোন করে নেতাজিনগরের ফ্ল্যাটে ডেকেছিল। তারপর নেতাজিনগরের ফ্ল্যাটে আসতেই শৌভিক শুভজিৎ এবং তার গাড়ি চালককে আটকে রেখে মারধর করে এবং তার গাড়ি নিয়ে চলে যায়। পরে তরুণী অভিযোগ জানান, শুভজিৎ তাকে ধর্ষণ করে। অথচ সেই সময় শুভজিৎ গাড়িতে ছিল না।