কলকাতার গড়ফায় ফের রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া। এবার দাদার দেহ আগলে রাখলেন বোন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাটি ঘটেছে কালিকাপুর মেন রোডে। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লেই প্রতিবেশীরা থানায় খবর দেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে দেখতে পায় মধ্যবয়স্কা এক মহিলা মৃত ব্যক্তির দেহ আগলে রয়েছেন। পুলিশের অনুমান, দিন তিনেক আগে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। যদিও মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। মৃতদেহ ময়না তদন্ত জন্য পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেয়ের দেহ আগলে দু’দিন কাটালেন মা, খাস কলকাতায় আবার রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শিবরাম বেহারা (৫৫)। তিনি উচ্চ শিক্ষা দফতরে পিওনের কাজ করতেন। তাদের অভিভাবকরা অনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন। বর্তমানে দাদা বোন দুজনেই ওই বাড়িতে থাকতেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাইরের লোকের সঙ্গে খুব বেশি মেলামেশা করতেন না দুই ভাই-বোন। শুধুমাত্র প্রয়োজনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলতেন তাঁরা। স্থানীয়দের আরও দাবি, ওই মহিলার মানসিক সমস্যা রয়েছে। বৃহস্পতিবার পচা গন্ধ পেয়ে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তারা থানায় খবর দেন। পরে গড়ফা থানার পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে দেখে মেঝেতে পড়ে রয়েছে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ। যদিও মৃত ব্যক্তির কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল কিনা তা জানা যায়নি । মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তারপরে জানা যাবে কীভাবে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
প্রসঙ্গত, বছর দুয়েক আগে একইভাবে বৃদ্ধ বাবার দেহ তিন মাস ধরে আগলে তেখেলিনে ছেলে। ওই ঘটনাটি ঘটেছিল গড়ফার গাঙ্গুলিপুকুর এলাকায়। তিন মাস বাবার মৃতদেহ বাড়িতে ফেলে রেখেছিলেন তিনি। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পুলিশ গিয়ে বৃদ্ধের দেহাবশেষ উদ্ধার করে। সে ক্ষেত্রে জানা যায়, বৃদ্ধের নাম ছিল সংগ্রাম দে। তিন মাস ধরে তাঁকে দেখতে পাননি প্রতিবেশীরা। তিনি পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন। তিনি এলাকার সকলের সঙ্গে মিশতেন। তবে হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর এলাকাবাসীরা তার বাড়িতে গিয়ে জানতে পারেন যে তিনি তিন মাস আগেই মারা গিয়েছেন এবং দেহের সৎকার না করে বিছানাতে তার দেহ রেখে দিয়েছিলেন ছেলে। পুলিশকে জানানো হলে গেলে জোর করে ওই বাড়িতে ঢুকে দেহ উদ্ধার করে তারা।