আবারও মানবিকতার নজির গড়ল পুলিশ। হারিয়ে যাওয়া অশীতিপর বৃদ্ধকে শহরের ফুটপাথ থেকে উদ্ধার করে গ্রামের বাড়িতে ফেরাল কলকাতা পুলিশ। পান্ডুয়ায় গ্রামের বাড়ি থেকে কীভাবে কলকাতার রাজপথে পৌঁছলেন, তা নিজেও ঠাওর করতে পারেননি বৃদ্ধ। অশীতিপর বৃদ্ধকে ঠায় রাস্তায় বসে থাকতে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল বিবাদী বাগে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট তুহিন রায়চৌধুরীর। তাঁর উদ্যোগেই অবশেষে পাণ্ডুয়ার বাড়িতে ফিরলেন ওই বৃদ্ধ। কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বিবাদী বাগে। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন তুহিনবাবু। তিনি লক্ষ্য করেন, কিছুটা দূরে ফুটপাথে বসে থাকা এক বয়স্ক ব্যক্তি শূন্য দৃষ্টিতে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তুহিনবাবু জানতে পারেন, ওই বৃদ্ধ ক্ষুধার্ত। অনেকক্ষণ ধরে কিছু খাননি তিনি।
তা জানতে পারেই প্রথমে জল খাবারের ব্যবস্থা করেন ওই পুলিশকর্মী। কিছুটা ধাতস্থ হয়ে ওই বৃদ্ধ জানান তাঁর নাম মাধব মণ্ডল (৮০)। বাড়ি হুগলি জেলার পান্ডুয়ায়। সঙ্গে সঙ্গে তুহিনবাবু হেডকোয়ার্টারে খবর পাঠান। সেখান থেকে খবর যায় হেয়ার স্ট্রিট থানায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন হেয়ার স্ট্রিট থানার সাব ইন্সপেক্টর শেখর সরকার। তিনি ওই বৃদ্ধকে সঙ্গে নিয়ে থানায় পৌঁছান।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ততক্ষণে কিছুটা অস্থির হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধ। তিনি জানান, তাঁর চার ছেলে রয়েছে, অথচ একজনেরও নাম ঠিকানা মনে করতে পারছেন না তিনি। এমনকী, কীভাবে তিনি পান্ডুয়া থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছলেন, তাও মনে করতে পারেননি ওই বৃদ্ধ।পান্ডুয়ার বাসিন্দা এক সিভিক ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে ওই বৃদ্ধের বাড়ি তালবনা গ্রামের খোঁজ পান ওই পুলিশ আধিকারিক। পান্ডুয়া থানায় যোগাযোগ করে ওই বৃদ্ধের বাড়ি নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু মাধববাবুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ওই বৃদ্ধকে গ্রামে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপর গাড়ি ভাড়া করে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ও এক কনস্টেবলের সঙ্গে ওই বৃদ্ধকে বাড়ির উদ্দেশে পাঠানো হয়। শেষে পান্ডুয়া থানার সাহায্যে বাড়ি পৌঁছান ওই বৃদ্ধ। চোখের জলে পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি মাধববাবু। তাঁর বিপদে পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি পুলিশ আধিকারিকরাও।