বিধানসভায় সংঘাতের আবহ বজায় রাখা হবে বলে ঠিক করেছিল বিজেপি। আর সেটা দেখা গিয়েছিল ২ জুলাই রাজ্য বিধানসভায়। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বাজেট বক্তৃতা শুরু হতেই বিজেপি বিধায়করা হই–হট্টগোল করে তা ভেস্তে দেয়। সেটা অবশ্য পূর্ব পরিকল্পিতই ছিল। আজ মঙ্গলবার রাজ্যপালের ভাষণ, ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড–সহ নানা বিষয়ে আলোচনার সময়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠে অধিবেশন কক্ষ। বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কদের তরজায় তপ্ত হয়ে ওঠে। তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়করা বক্তব্য রাখতে উঠলেই কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়করা বলতে থাকেন, সত্যের মুখোমুখি হতে পারবে না বলেই পালিয়ে যাচ্ছে।
আজ রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনা করতে গিয়ে নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কদের তুমুল বচসা শুরু হয়। বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীকে ঘিরে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়করা দলবদল নিয়ে আক্রমণ করেন। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে মিহির বলেন, ‘তিনিই তো কংগ্রেস থেকে দল বদলে তৃণমূল কংগ্রেসে গিয়েছেন।’ তাতে আরও বাক–বিতণ্ডা শুরু হয়। কারণ এই দলটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তৈরি। তিনি দলবদল করেননি। পৃথক দল তৈরি করে বামফ্রন্ট সরকারকে সরিয়েছিলেন বলে সোচ্চার হন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়করা।
এদিন ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে বক্তব্য রাখেন মিহির গোস্বামী। তিনি রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন। কেন এই বিষয়টি নেই রাজ্যপালের ভাষণে? বলে প্রশ্ন তোলেন। মিহির গোস্বামীর অভিযোগ, মন্ত্রীদেরও নাম রয়েছে এই কাণ্ডে। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে ‘কাটমানির সরকার’, ‘ভাঁওতাবাজির সরকার’, ‘নারী নির্যাতনের সরকার’ বলে আক্রমণ করেন তিনি। তখন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, মিহিরের বক্তব্যে আপত্তিকর কথা আছে কি না, তা দেখে বাকিটা গ্রহণ করা হবে।
পাল্টা ভ্যাকসিন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। তাঁর প্রশ্ন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপির রাজ্য সরকারগুলিকে ৩ কোটি করে ভ্যাকসিন দিয়েছে। আমাদের রাজ্যে পৌনে দু’কোটি মাত্র ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এটা বাংলাকে বঞ্চনা করার কৌশল।’ আলোচনা চলাকালীন বারবার বিরোধী দলনেতা বেরিয়ে যান অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে। তা দেখে তাঁর উপর ক্ষুব্ধ হন স্পিকার।