কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে রসবার চাকরি বাতিল হয়েছে। এই আবহে প্রায় ২৬ হাজার জন চাকরি হারিয়েছেন। শিক্ষক-শিক্ষিকার পাশাপাশি গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদেরও অনেকের চাকরি বাতিল হয়েছে উচ্চ আদালতের নির্দেশে। এই পরিস্থিতিতে মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, হাই কোর্টের রায়ের জেরে বাংলার স্কুলগুলিতে প্রায় ১৫ শতাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা কমে যাবে। শুধু তাই নয়, সঙ্গে প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ গ্রুপ ডি কর্মী কমবে। এব গ্রুপ সি কর্মীও কমবে প্রায় ২৫ শতাংশ। এই আবহে তাঁর গলায় যে ধরা পড়েছে উদ্বেগ। তাঁর কথায়, 'স্কুল পরিচালনা করা, পঠন পাঠন ব্যবস্থা, সবটাই দেখা-বোঝা বোর্ডের দায়িত্ব। স্কুলগুলো কীভাবে চলবে, সেটা আমাদের নজর রাখতে হবে।'
এদিকে নিজেদের 'যোগ্য' বলে দাবি করা বেশ কয়েকজন চাকরিহারা শিক্ষক গতকাল পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে নাকি জানানো হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে পর্ষদ। এই সংক্রান্ত আইনি পরামর্শ নেওয়ার প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী জনসভা থেকে দাবি করেছিলেন, রাজ্য সরকার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাবে। এই একই কথা শোনা গিয়েছিল এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের গলায়।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সবির রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এসএসসি মামলায় রায়দান করে বলে, ২০১৬ সালে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দ্বাদশে নিয়োগ পাওয়া এসএসসি চাকরিপ্রাপকদের সবার চাকরি বাতিল হবে। পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত বলে, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরি বৈধ হতে পারে না। অন্যদিকে চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে সব বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রাপ্ত বেতনের ওপর ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে চাকরিহারাদের। এর জন্যে চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহ সময় দিয়েছে হাই কোর্ট। এই টাকা জেলাশাসকের কাছে জমা করতে হবে তাঁদের। পরে জেলাশাসক পরবর্তী ২ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা হাই কোর্টে জমা দেবেন।
অপরদিকে এসএসসি-কে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুরও নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ওমএমআর শিট পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টেন্ডার ডেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলল আদালত। এর পাশাপাশি এসএসসির সার্ভারে দ্রুত ওএমআর শিট আপলোড করতে বলেছে হাই কোর্ট। এদিকে হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত জারি রাখবে সিবিআই। নির্দেশে বলা হয়েছে, 'যাকে প্রয়োজন, তাকেই হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই'।