লোকসভা ভোট মিটে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। কিন্তু কীভাবে কী করা হবে, তা নিয়ে ধন্দে আছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাঁরা অংশগ্রহণ করেছিলেন, শুধুমাত্র তাঁরাই (অনেকের বয়সসীমা পেরিয়ে গিয়েছে) নয়া প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে পারবেন নাকি ২০১৬ সালের নিয়োগ পরীক্ষা না হওয়ায় যাঁরা চাকরির কোনও সুযোগ পাননি, তাঁদেরও সুযোগ দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কমিশনের তরফে আপাতত অবশ্য সেই দুটি প্রশ্নের কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরে সুপারিশ প্রদানকারী কমিশনের তরফে শুধুমাত্র জানানো হয়েছে যে রাজ্য সরকারের সবুজ সংকেত পেলে আদালতের নির্দেশ মতো এগিয়ে যাওয়া হবে। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে যে কমিশন সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে, তা জানিয়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার।
এমনিতে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করার রায়ের মধ্যেই সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে যে লোকসভা ভোট শেষ হয়ে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে কমিশনকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেইসঙ্গে ২৪,০০০-র বেশি শূন্যপদ পূরণের জন্য ২০১৬ সালে যে ২৩ লাখ প্রার্থী পরীক্ষায় বসেছিলেন, তাঁদের ওএমআর শিট পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আর সেটা থেকেই সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, পুরো প্যানেল বাতিল হওয়ার ফলে যে যোগ্যরাও চাকরি হারাচ্ছেন, তাঁরা ফের চাকরির সুযোগ পাবেন। আর কমিশন আগে জানিয়েছিল যে সময়সাপেক্ষ হলেও ওএমআর শিট পুনর্মূল্যায়ন করলে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করা সম্ভব। সেইমতো নতুন প্যানেল প্রকাশ করা হবে। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি পাওয়া অনামিকা রায় দাবি করেছেন, আইনজীবী জানিয়েছেন যে ফের নতুন করে প্যানেল তৈরি হবে।
সরকারের দোষেই যোগ্য প্রার্থীদের হেনস্থার মুখে পড়তে হল, দাবি শিক্ষা মহলের
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘এসএসসি যোগ্যদের সঙ্গে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার অপরাধে যেমন অপরাধী, তেমনই আজ যদি অযোগ্যদের সঙ্গে যোগ্যদের চাকরি বাতিল করে দেওয়া হয়, তাহলে সেটাকে কী বলবেন? তদন্তকারী সংস্থা কেন কে যোগ্য কে অযোগ্য বাছাই করতে পারল না? দুর্নীতিগ্রস্ত এসএসসিকে আবার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে কেন?'
তিনি আরও বলেন, 'আদালতের তত্ত্বাবধানে এসএসসি বা রাজ্য প্রশাসন অসহযোগিতা করলে আইনের মাধ্যমে তাদের বাধ্য করেই প্রকৃত অযোগ্যদের বাতিল করা যেত। এসএসসি এবং সরকারের অপদার্থতার দায়ে যোগ্য-অযোগ্যদের এক করে দেওয়া হবে কেন? কোন ক্ষেত্রেই যোগ্যরা যাতে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে।’