প্যারা টিচার বা পার্শ্ব শিক্ষকদের জন্য সুখবর। এতদিন ধরে তাঁরা শিক্ষকের সমান কাজ করলেও বেতনের ক্ষেত্রে রয়েছে বিস্তর ফারাক। ফলে দীর্ঘদিন ধরে সহকারি শিক্ষকের মতো মর্যাদা চেয়ে আসছেন তাঁরা। অবশেষে এবার তাঁদের দাবি-দাওয়া নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। তাঁদের পদোন্নতির করার কথা ভাবছে সরকার। এবিষয়ে তাঁদের নিয়ে একটা সার্ভিস করার কথা ভাবা হচ্ছে। কতজন পার্শ্ব শিক্ষক রয়েছেন? তাঁরা কীভাবে কাজ করছেন? সে সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য এই সমীক্ষা করা হবে।
আরও পড়ুন: প্রধান শিক্ষকের স্বর নকল করে কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনে প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা
গত সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিক্ষানীতি গ্রহণের সময় এই বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, প্যারা টিচারদের অভিযোগ ছিল শিক্ষকদের সমান তাঁরা কাজ করে থাকেন। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের থেকে বেশি কাজ করতে হয় তাঁদের। এমনকী স্কুলের বিভিন্ন কাজও তাঁদের করতে হয়। শিক্ষকদের সমতুল্য বেতনের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন তাঁরা। সূত্রের খবর, রাজ্য মন্ত্রিসভায় এই বিষয়টি আলোচনা হওয়ার পরেই এখন শিক্ষকমহলে এ নিয়ে জোরচর্চা শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নন্দিনী মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। শুনে ভালো লাগছে।’ তবে একইসঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, রাজ্য সরকার দায়িত্ব নিয়ে কতটা প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন তা নিয়ে।
শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকারও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘খুব ভালো কথা। কিন্তু তাঁদের উন্নতির পাশাপাশি শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। কোনওভাবেই স্থায়ী শিক্ষকদের শূন্য পদ অবলুপ্ত যেন করা না হয়।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কলেজের চুক্তিভিত্তিক অধ্যাপকরা আসার পর স্থায়ী অধ্যাপকদের শূন্য পদ কমে গিয়েছে। স্কুলের ক্ষেত্রে যেন তা না হয়।’
তবে শুধুমাত্র প্যারা টিচারই নয়, সরকারি শিক্ষকদেরও পদোন্নতির জন্য নিয়া নিয়ম নিয়ে আসছে রাজ্য সরকার। একাডেমিক পারফরমেন্স ইনডেক্টর চালু করছে রাজ্য সরকার। এর মাধ্যমে তাঁদের বার্ষিক মূল্যায়ন খতিয়ে দেখা হবে। শিক্ষকদের শিক্ষকতার মান খতিয়ে দেখা হবে। এর জন্য ‘অ্যাপ্রাইজাল’ পদ্ধতিতে যাচাই করা হবে।
অন্যদিকে, চিকিৎসকদের মতো শিক্ষকদেরও গ্রামাঞ্চলে পাঁচ বছরের শিক্ষকতা চালু করার বিষয় নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছে রাজ্য সরকার। নয় শিক্ষানীতিতে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে নবনিযুক্ত শিক্ষকদের কর্মজীবনে পাঁচ বছর গ্রামাঞ্চলে গিয়ে শিক্ষকতা করাতে হবে। শিক্ষক ছাত্র অনুপাত সমান রাখার জন্য এমন চিন্তা ভাবনা রাজ্যের। যদি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি চিন্তাভাবনার পর্যায়ে আছে।