একদিন সিঙ্গুর সরণী বেয়েই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারটি পেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাই মত অনেকের। কার্যত কারখানার কাজ লাটে তুলে চলে গিয়েছিলেন রতন টাটা। এরপর এতগুলো বছর কেটে গিয়েছে। সিঙ্গুর আছে সিঙ্গুরেই। সব জমিতে চাষ আবাদ এখনও শুরু করা যায়নি। এনিয়ে কৃষকদের একাংশের মধ্য়ে হতাশা রয়েছে। তবে তার মধ্য়েই গোদের উপর বিষ ফোড়ার মতো সামনে এল ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ। এবার রাজ্য কী করবে?
আরবিট্রাল ট্রাইবুনাল বা সালিশি আদালত জানিয়েছে সিঙ্গুরে গাড়ি কারখানার সূত্রে টাটা মোটরসকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ, ২০১৬ সাল থেকে ১১ শতাংশ সুদ, মামলা খরচ বাবদ এক কোটি টাকা দিতে হবে। এদিকে এই রায়ের পরেই কার্যত ঘুম উড়েছে সরকারের।
এদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন জনগণের করের টাকা থেকে এই টাকা দিলে আন্দোলন হবে। এই টাকা তৃণমূলের ফান্ড থেকে দিতে হবে।
তবে এবার রাজ্য সরকার কী করবে?
সূত্রের খবর, এবার রাজ্য সরকার এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে। ইতিমধ্য়ে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায় এনিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এদিকে রাজ্য সরকার মাঝেমধ্যে বলে তাদের কার্যত আর্থিক টানাটানি। এনিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীও নানা সময় নানা কথা বলেছেন। এবার আবার বিরাট ক্ষতিপূরণের নির্দেশ। এই বিপুল টাকা জোগাড় করা কি আদৌ সম্ভব?
তবে সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার বলা ভালো তৃণমূল এখন সিপিএমের কোর্টে বল ঠেলতে চাইছে। ইতিমধ্য়েই দলের মুখপাত্র সুর চড়িয়েছেন যে সিপিএমকেই এই টাকা দিতে হবে।
শোভনদেব একটি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, আইন না বুঝে যারা জমিটা দিয়ে গেলেন তারাও দায়ী। আজ তারা ক্ষমতায় নেই। স্বাভাবিকভাবে চেয়ারে যে বসে তার দায়িত্ব এসে যায়। আদালতে যাব আমরা।
তাহলে শেষ পর্যন্ত সিঙ্গুর ইস্যুতে এবার আদালতে যেতে চাইছে রাজ্য সরকার। কার্যত সিঙ্গুর ইস্যু যে এভাবে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসবে তা মনে হয় কোনওদিন ভাবতেই পারেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে নিয়ম অনুসারে আদালতে যেতে গেলেও ক্ষতিপূরণের অর্থ আংশিক অথবা পুরোটা গচ্ছিত রাখতে হতে পারে। সেটাও কি সম্ভব?