গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল বিপর্যয়ের পরে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম। তাতে জানা গিয়েছে, নিচের তলার পরিবর্তে উপরের তলা থেকে ইট দিয়ে দেওয়াল গাঁথা হচ্ছিল। আর সেই ভার সইতে না পেরেই বহুতলটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। আর তারপরেই বহুতলের নিচে চাপা পড়ে যায় বহু মানুষ।
আরও পড়ুনঃ ‘সব শেষ হয়ে গেল’, গার্ডেনরিচ থেকে মুর্শিদাবাদে ফেরা হল না ছেলের, কাঁদছেন বাবা
প্রোমোটারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই জমির মালিকের নাম নাসির আহমেদ। তাকে অপরের তলায় ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল। ঘরের জন্য তিনি প্রোমোটারকে চাপ দিছিলেন। সেই কারণে উপরের তলায় ইটের গাঁথনি দিয়ে আগে কাজ শেষ করতে চেয়েছিলেন প্রোমোটার। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি।
প্রসঙ্গত, ৫ তলার এই বহুতলে মোট ১৬ টি ঘর তৈরি করা হচ্ছিল। প্রত্যেকটি ঘরের আয়তন ৫০০ বর্গফুট। সেক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটের দাম ১৬০০ টাকা করে ধরা হয়েছিল। অনেকে এর জন্য অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছিলেন। তবে বহুতলটি ভেঙে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এখন ক্রেতাদের মাথায় হাত।
আগে ওই জায়গায় একটি জলাশয় ছিল। সেই জলাশয়টি বুজিয়ে বহুতল নির্মাণ করা হচ্ছিল। সেক্ষেত্রে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। যদিও গার্ডেনরিচে আগেও একাধিক বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। তবে ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের আজহার মোল্লা বাগানে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা এর আগে কোনওদিন ঘটেনি। সেক্ষেত্রে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে , এই প্রোমোটার ওয়াসিম এক সময় রাজাবাজার এলাকায় দুধ সরবরাহ করতেন। এরপর পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। তারপরে ফিরোজ নামে এক যুবকের সঙ্গে গার্ডেনরিচ এলাকায় বেআইনি নির্মাণের ব্যবসা শুরু করে। অভিযোগ, ওই এলাকায় ওয়াসিমের দাপট এতটায় যে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পেতেন না।
প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ৫ তলার বহুতলটি। ঘটনার খবর পেয়ে রাতে সেখানে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই ঘটনায় বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। এর পরের দিনই ১৫ নম্বর বরোর ৩ ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ করা হয়েছে।