শহরে তিনটে নতুন সেফ হোম চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম ও নেতাজি ইন্ডোরকে সেফ হোমে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ রাজ্যে বাড়তে থাকা দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপট রুখতে যে তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার, এই উদ্যোগেই তার প্রমাণ মিলল। করোনা মোকাবিলাকেই যে সব চাইতে আগে প্রাধান্য দেওয়া হবে, মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েই তা জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের বেড সমস্যা মেটাতে বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যৌথভাবে সেফ হোম চালু করছে রাজ্য সরকার। এবার প্রশাসনের উদ্যোগে আরও ৩টি নতুন সেফ হোম হচ্ছে কলকাতায়। সেফ হোম করা হচ্ছে ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম ও নেতাজি ইন্ডোরকে।
জানা গিয়েছে, নতুন তিনটি সেফ হোমে প্রায় ৬০০ বেড থাকছে। এই তিনটি সেফহোমের দায়িত্বে থাকবে আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, কোভিড হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছিল সল্টলেক স্টেডিয়ামকে। আমরি হাসপাতাল পরিচালিত এই হাসপাতালে টুইন শেয়ার ও সিঙ্গল কেবিন—সহ থাকছে মোট ২৩৩টি বেড। ভাড়া পড়বে দিনে ৩ থেকে ৮ হাজার টাকা।
প্রসঙ্গত বিভিন্ন সময় কেন্দ্রের বিভিন্ন বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আপাতত করোনা মোকাবিলায় কিছু সরকারি স্থানে বেসরকারি সাহায্যের পথেই গেলেন তিনি।
এর আগে কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামকে করোনা হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছিল। ১৫৩ বেডের ওই হাসপাতালে জেনারেল বেডের পাশাপাশি আইসিইউ, এইচডিইউ ছাড়াও অক্সিজেন প্ল্যান্টও রয়েছে।
আবার পাইকপাড়ার হরেকৃষ্ণ শেঠ লেনে মহিলাদের হস্টেলে ৭৫ বেডের সেফ হোম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। প্রথম পর্যায়ে ৪০টি বেড থাকছে সেখানে। থাকছে অক্সিজেন পার্লারও।
ওদিকে বাঁকুড়ার বিকনায় কর্মতীর্থকে রূপান্তর করা হয়েছে সেফ হোমে। ৫০ বেডের সেফ হোমে ২৫টি বেড মহিলাদের জন্য ও ২৫টি বেড পুরুষদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এছাড়া, দক্ষিণ কলকাতার উত্তীর্ণতেও সেফ হোম চালু হয়। আপাতত ১০০ বেডের এই সেফ হোমে উপসর্গহীন রোগীদের রাখা হয়েছে। রয়েছেন চিকিত্সক ও নার্সও। অবশ্য পরে বেডের সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০০ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
উল্লেখ্য, এর আগে সরকারি হাসপাতালে বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এবার থেকে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কোভিড বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আর তাদের স্বাস্থ্য ভবনের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, কোভিড বেড বাড়ানোর ব্যাপারে এবার থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরাই।