বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > নিষ্ক্রিয় ১ কোটি ১৩ লক্ষ রেশন কার্ডের পুরোটাই রাজ্যের RKSY প্রকল্পের অধীন

নিষ্ক্রিয় ১ কোটি ১৩ লক্ষ রেশন কার্ডের পুরোটাই রাজ্যের RKSY প্রকল্পের অধীন

পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। ফাইল ছবি

কার্ড বন্ধ করার অদ্ভূত কারণ দেখিয়েছেন মন্ত্রীমশাই। তিনি বলেন, ‘আমরা সমীক্ষা করে দেখেছি। অনেকে মারা গিয়েছেন। প্রায় ১৪ লক্ষ ডুপ্লিকেট কার্ড আছে। মৃত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫৪ লক্ষ।’ সরকারের দাবি সত্যি হলে নিষ্ক্রিয় হওয়ার কথা ৬৮ লক্ষ কার্ড। তাহলে বাকি ৪৬ লক্ষ মানুষ কী দোষ করল? তাদের কার্ড বন্ধ হল কেন?

অবশেষে প্রকাশ্যে এল রাজ্যের ১ কোটি ১৩ লক্ষ নিষ্ক্রিয় করে রাখা রেশন কার্ডের রহস্য। খাদ্যমন্ত্রী রথীর ঘোষ জানিয়েছেন, যে কার্ডগুলি বন্ধ করে রাখা হয়েছে তা সবকটিই রাজ্য সরকারের ২ টাকা কিলো দরে চাল ও গম পাওয়া গ্রাহকদের। গণশক্তিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রের প্রকল্প সম্পূর্ণ ভাবে ব্যবহার করতেই এই কৌশল বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

সম্প্রতি জানা যায়, রাজ্যে প্রায় ১ কোটি ১৩ লক্ষ রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে গণবণ্টন দফতর। এর মধ্যে একটা বড় সংখ্যায় ভুয়ো কার্ড রয়েছে বলে দাবি করা হয় দফতর সূত্রে। কিন্তু বাকি কার্ড কেন বন্ধ তার জবাব তখন দেননি খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। অবশেষে প্রকাশ্যে এল সেই রহস্য।

গণশক্তির প্রতিবেদন অনুসারে মন্ত্রীমশাই জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রায় ১ কোটি ১৪ লক্ষ মানুষের কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেট করে রেখেছি। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে আমাদের কোটা ধরে রাখতে হবে। যে কার্ডগুলি বাদ পড়বে তা সবই আরকেএসওয়াই (রাজ্য সরকারের ২ টাকা কেজি চাল প্রকল্প) থেকে বাদ যাবে।’

বিভিন্ন সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে থাকেন, রাজ্যের ১০ কোটি মানুষকে ২ টাকা কেজি দরে চাল দেয় তাঁর সরকার। রহস্য হল, এর মধ্যে ৬ কোটি ১ লক্ষ মানুষকে চাল – ডাল দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রকল্প তৃণমূল জমানার আগে থেকেই চলে আসছে। তৃণমূল সরকার এসে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা চালু করে। এই যোজনার দুটি ভাগ রয়েছে। RKSY -1 এর সুবিধাভোগীরা ২ টাকা কেজি দরে চাল পেয়ে থাকেন। আর RKSY – 2-র গ্রাহকরা ৯ টাকা কেজি দরে গম ও ১৩ টাকা কেজি দরে চাল পেয়ে থাকেন। এই দুই প্রকল্প থেকেই নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৪ লক্ষ রেশন কার্ড। তবে কেউ চাইলে রেশন দোকানে গিয়ে তাঁর কার্ড চালু করে নিতে পারবেন।

কার্ড বন্ধ করার অদ্ভূত কারণ দেখিয়েছেন মন্ত্রীমশাই। তিনি বলেন, ‘আমরা সমীক্ষা করে দেখেছি। অনেকে মারা গিয়েছেন। প্রায় ১৪ লক্ষ ডুপ্লিকেট কার্ড আছে। মৃত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫৪ লক্ষ।’ সরকারের দাবি সত্যি হলে নিষ্ক্রিয় হওয়ার কথা ৬৮ লক্ষ কার্ড। তাহলে বাকি ৪৬ লক্ষ মানুষ কী দোষ করল? তাদের কার্ড বন্ধ হল কেন?

খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির দাবি, এই কার্ড ধারকরা দীর্ঘদিন রেশন তোলেন না। কিন্তু রেশন না তুললে যদি কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় তাহলে খাদ্য সুরক্ষা আইনের তাৎপর্য কী? সেই প্রশ্ন উঠছে।

খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বায়োমেট্রিক বাধ্যতামূলক হওয়ার পর এক নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেকের আঙুলের ছাপ মিলছে না। যার ফলে তারা রেশন তুলতে পারছেন না। দিনের পর দিন রেশন না তোলায় তাদের কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। সেই রেশন যাতে রাজ্যের হাতছাড়া হয়ে না যায় তাই রাজ্যের প্রকল্পের কার্ড নিষ্ক্রিয় করার সিদ্ধান্ত। এক কথায় নিজেদের খরচ কমাতে কেন্দ্রের প্রকল্প সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

 

 

বন্ধ করুন