গোপনীয়তা রক্ষা করলেন না রাজ্যপাল জগদীর ধনখড়। এই অভিযোগ এখন উঠেছে রাজ্য–রাজনীতিতে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে যে ‘ব্যক্তিগত বার্তা’ পাঠিয়েছিলেন, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় তা প্রকাশ্যে নিয়ে আসায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস। আর তার জেরে ভবিষ্যতে রাজভবনের সঙ্গে ‘সৌজন্যমূলক যোগাযোগ’ আর রাখা হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। অর্থাৎ রাজ্যপালকে একঘরে করে রাখা হবে বলে সূত্রের খবর। এদিন রাজ্যপাল একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘গত বৃহস্পতিবার জরুরি কথা বলতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে একটি বার্তা পাঠান। দু’জনের মধ্যে ফোনে কথা হয়। তখনই তাঁকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তিনি কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রীর ইয়াস পর্যালোচনা বৈঠকে থাকতে পারবেন না।’
রাজ্যপালের ওই টুইট প্রকাশ্যে আসায় তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাই মঙ্গলবার সকাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান, রাজভবনের সঙ্গে আর ‘বার্তা বিনিময়’ নয়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূল কংগ্রেসের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘রাজনীতিতেই এই ধরনের বার্তা বিনিময় চালু থাকে। মুখ্যমন্ত্রী সৌজন্যবোধ থেকে রাজ্যপালকে বার্তা পাঠিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। রাজ্যপাল সেটা জনসমক্ষে এনে ভুল করেছেন। এটা রাজ্যপালের পদমর্যাদাকে ক্ষুন্ন করে। এমন আচরণ করলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক! তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখা যাবে না।’
এদিন টুইটে রাজ্যপাল দাবি করেন, মোদীর পর্যালোচনা বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী থাকলে তিনি হাজির থাকতে পারবেন না বলে তাঁকে জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। রাজ্যপাল লেখেন, ‘এই ঘটনার যে ভুল বর্ণনা দেওয়া হচ্ছে, তার জন্যই জানিয়ে রাখি, গত ২৭ মে রাত ১১টা ১৬ মিনিটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় একটি বার্তা পাঠান। সেখানে তিনি লেখেন, আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারি? খুব জরুরি। তখনই উনি আমায় ফোন করে ইঙ্গিত দেন, ওই বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী থাকলে তিনি ওই বৈঠক বয়কট করবেন’। টুইটের শেষে লেখেন, ‘অহং জিতল, হেরে গেল নাগরিক পরিষেবা’।
রাজ্যপালের এই টুইট নিয়ে ফের রাজভবন–নবান্ন সংঘাত শুরু হয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ তিনি টুইটে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে লেখেন, ‘দেশের সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর দীর্ঘ ইতিহাসে ২৮ মে দিনটি কালো দিন হয়ে থেকে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর পর্যালোচনা বৈঠকে ধ্বংস হয়েছে দেশের গণতন্ত্র’। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, রাজ্যপালের এই টুইট ভালভাবে নেওয়া হয়নি। তাই রাজ্যপালের সঙ্গে ‘একান্ত আনুষ্ঠানিক এবং সংবিধান সম্মত’ ছাড়া অন্য কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না।