রেশন দুর্নীতির অভিযোগে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আর তা নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য–রাজনীতি। এই গ্রেফতারে একটু অক্সিজেন পেয়ে নাগাড়ে আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। সুকান্ত, শুভেন্দু থেকে দিলীপ—কেউ বাদ যাচ্ছেন না আক্রমণ করতে। আর তার মধ্যেই নয়াদিল্লি থেকে পাঠানো কেন্দ্রীয় সরকারের একটি চিঠি প্রকাশ্যে আনলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পরবর্তী রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। দু’মাস আগে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারকে। তাতে বাংলার খাদ্য দফতরের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? বাংলা যে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে সেটা আবার প্রমাণিত হল কেন্দ্রীয় সরকারের শংসাপত্রে। রেশন সামগ্রীর ম্যানুয়াল ডিস্ট্রিবিউশন নিয়ে কড়াকড়ি করেছিল কেন্দ্র। সব রাজ্যকেই জানানো হয়েছিল, ম্যানুয়াল ডিস্ট্রিবিউশন করা যাবে না। করতে হবে অটোমেটেড ডিস্ট্রিবিউশন। আর এই গোটা বিষয়টির নজরদারিতে নিয়ে আসা হয়েছিল অন্নবিতরণ পোর্টাল। কোথাও কোনও ম্যানুয়াল ডিস্ট্রিবিউশন হচ্ছে কি না সেটা অন্নবিতরণ পোর্টালে নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলকও করা হয়েছে। মে মাস থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। রেশন কার্ডের ভিত্তিতে ম্যানুয়ালি রেশন সামগ্রী বণ্টন করা হচ্ছে কি না সেটার উপর নজর করতেই এই পোর্টাল।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই নিয়ম কার্যকর করার পর থেকেই দেখা যায় এগিয়ে বাংলা। কারণ বাংলা এই পথে হেঁটেই স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছে। আর তার স্বীকৃতি দিচ্ছে স্বয়ং কেন্দ্রীয় সরকার। সেক্ষেত্রে রেশন দুর্নীতির অভিযোগ কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ৩১ অগস্ট ওই চিঠিটি পাঠানো হয়েছিল। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষের এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিকে বাংলায় কোথাও ম্যানুয়াল রেশন সামগ্রী ডিস্ট্রিবিউশন করা হয়নি। বাংলার খাদ্য দফতরের গণবণ্টন ব্যবস্থার প্রশংসা করেছে কেন্দ্র। রেশন দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়কে। আর তল্লাশি করা হয়েছিল রথীন ঘোষের বাড়িতে। আজ সেই চিঠি প্রকাশ্যে আনলেন খাদ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মুকুল রায়! বাড়িতে ছুটলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী, তুঙ্গে চর্চা
ঠিক কী বলছেন খাদ্যমন্ত্রী? এই চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি নেতাদের মুখ চুপসে গিয়েছে। কারণ এটা স্বয়ং কেন্দ্রের চিঠি। তারপর এমন গ্রেফতার প্রতিহিংসার সামিল বলে ব্যাখ্যা তৃণমূল কংগ্রেসের। এই বিষয়ে রথীন ঘোষের বক্তব্য, ‘সমস্ত রেশন কার্ডের কেওয়াইসি করা আছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সংস্কার করা হয়েছে। অনেকে বলছিলেন, বায়োমেট্রিকে সমস্যা হচ্ছে। তখন আমরা দ্রুত আইডি স্ক্যানারের ব্যবস্থা করেছি। আর প্রায় ১৬ হাজার দোকানে ই–ওয়েং স্কেলের ব্যবস্থা করেছি। যাতে স্বচ্ছতা থাকে। এমনকী সঠিকভাবে যাতে ওজন হয়।’